দেশের নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে এ বার টুইটারে তরজায় জড়ালেন স্মৃতি ইরানি আর রাহুল গাঁধী। কালই শিক্ষায় গৈরিকীকরণ নিয়ে সঙ্ঘকে এক হাত নিয়েছেন রাহুল। আজ সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে সরাসরি মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন কংগ্রেসের সহসভাপতি। পাল্টা টুইট করে রাহুলকে মুখোমুখি বিতর্কের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও।
ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। গত ২২ মে আইআইটি মাদ্রাজের ছাত্র সংগঠন ‘অম্বেডকর পেরিয়ার স্টাডি সার্কেল’ (এপিএসসি)-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন ডিন অব স্টুডেন্টস শিবকুমার এম শ্রীনিবাসন। অভিযোগ, মোদী সরকারের নীতির সমালোচনা করে এক আলোচনাসভার আয়োজন করছিল তারা। জানাজানি হতেই সেই সভা বাতিল করে স্বীকৃতি কেড়ে নেওয়া হয় এপিএসসি-র। যা নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে।
ছাত্র সংগঠনটির অভিযোগ, তাদের বক্তব্য না শুনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ এপিএসসি-র বিরুদ্ধে গত ১৫ মে অভিযোগ গিয়েছিল কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে। স্মৃতির মন্ত্রকের চিঠি পেয়েই ওই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করেন আইআইটি কর্তৃপক্ষ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের নাম জড়ানোয় মাঠে নামেন রাহুল। টুইটারে প্রশ্ন ছোড়েন, ‘‘আইআইটি-র ছাত্ররা মোদী সরকারের সমালোচনা করে নিষিদ্ধ হল। এর পর কী?’’ কিছু পরেই দ্বিতীয় টুইট, ‘‘বাক্স্বাধীনতা আমাদের অধিকার। সমালোচনা গুঁড়িয়ে দেওয়ার যে কোনও চেষ্টার বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়াব আমরা।’’ রাহুলের এ দিনের নিশানাও ছিল সঙ্ঘ। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বিতর্কে না জড়িয়ে শুধু বলেন, ‘‘সঙ্ঘ-সদস্য হিসেবে আমি গর্বিত।’’ এপিএসসি-কে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি তিনি জানেন না বলে দাবি করেন।
আজ কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন এনএসইউআই স্মৃতির দিল্লির বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখায়। স্মৃতি তখন অসমে। এর পরেই রাহুলের বিরুদ্ধে টুইটারে রাহুলের আফিসের প্রতি ক্ষোভ উগরে লেখেন, ‘‘কাল এনএসইউআই-কে অরাজকতার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আর আজই আপনার গুন্ডারা আমার বাড়ি এসেছিল, যখন আমি কাজে বাইরে।’’ এর আগেই অবশ্য গোটা ঘটনায় তাঁর মন্ত্রকের কোনও হাত নেই বলে দাবি করেছিলেন স্মৃতি। এর পর রাহুলকে উদ্দেশ করে আরও কয়েকটি টুইট করেন স্মৃতি। তার একটায় লেখেন, ‘‘অ্যাট অফিস অব আরজি, আমায় শুধু সময় আর জায়গা বলে দিন। সরকার পরিচালনা বা শিক্ষা নিয়ে যে কোনও বিতর্কসভায় যেতে আমি রাজি।’’ এই রাজনৈতিক চাপানউতোরের মধ্যে আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে মুখ খুলেছেন আইআইটি কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম নিয়ে কোনও ছাত্র সংগঠনই কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারে না। আইআইটি মাদ্রাজের এটাই নিয়ম। সেই নিয়ম লঙ্ঘন করেছিল এপিএসসি। এটা বাক্ স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নয় বলেই মনে করেন ডিন। নিয়ম ভাঙা আংশিক সময়ের জন্য বাতিল করা হয়েছে ছাত্র সংগঠনটিকে। অগস্টে এ নিয়ে ছাত্রদের যুক্তি শুনেই যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।