কে পদ্মরাজন
বীরাপ্পনের মতো গোঁফে তা দিয়ে বললেন, ‘‘আমি হলাম ভোটের রাজা!’’
শাসক-বিরোধী শিবিরের তাবড় নেতারা এখনও রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। কিন্তু তাতে তাঁর কী? গত কাল রাষ্ট্রপতি ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হতেই সকলের আগে গিয়ে যিনি মনোনয়ন পেশ করে এসেছেন, তিনি তামিলনাড়ুর ডাঃ কে পদ্মরাজন। নামের আগে ‘ডাঃ’ লেখেন, আসলে হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক। তা-ও স্বঘোষিত! হলফনামায় লিখেছেন, অষ্টম শ্রেণি পাশ। তার পরে আন্নামালাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে করেসপন্ডেন্স কোর্সে ইতিহাসের স্নাতকোত্তর! এখন হোমিওপ্যাথি ছেড়ে গাড়ির টায়ারের ছোট দোকান চালান। এ হেন ব্যক্তিই নিজেকে বলেন ‘ভোটের রাজা’! দাবি করেন, এ যাবৎ ১৮০টির মতো ভোটে দাঁড়িয়ে হেরেছেন। হারের রেকর্ডই গড়তে চাইছেন তিনি!
আরও পড়ুন: আফগানিস্তান নিয়ে ট্রাম্পকে বলবেন মোদী
এর আগে এ পি জে আব্দুল কালাম, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও মনোনয়ন পেশ করেছেন। যথারীতি তা খারিজও হয়ে গিয়েছে! শুধু রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নয়, লোকসভা ভোটে গুজরাতের বডোদরায় গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধেও লড়েছেন। মনমোহন সিংহকেও ছাড়েননি রাজ্যসভায়। আর জয়ললিতার বিরুদ্ধে তো ভুরি ভুরি লড়েছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হয় মনোনয়ন খারিজ হয়ে গিয়েছে বা জামানত জব্দ হয়েছে। তাতেও ক্ষোভ নেই বছর ৫৮-এর পদ্মরাজনের। দিল্লিতে আজ বললেন, ‘‘নিজের পকেট থেকে ২৫ লক্ষ টাকা এ যাবৎ খুইয়েছি। এ বারেও রাষ্ট্রপতি ভোটে জিতব না, জানি। ত্রিশ বছর ধরে ভোটে লড়ছি শুধু হারার জন্য! দেখাতে চাই, আমার মতো সাধারণ মানুষও ভোটে লড়তে পারে।’’
গত কাল নির্বাচন কমিশনের বিজ্ঞপ্তি জারির পর এ যাবৎ আধ ডজন মনোনয়ন জমা পড়েছে রিটার্নিং অফিসার লোকসভার সেক্রেটারি জেনারেলের কাছে। তাঁরা কেউই কেষ্টবিষ্টু নন। লোকসভা সচিবলায় সূত্রের মতে, প্রতি বারই এ ধরনের মনোনয়ন জমা পড়ে। অধিকাংশই বাতিল হয়ে যায়। পদ্মরাজনের অবশ্য তাতেই জয়। ইতিমধ্যেই লিমকা বুকস অফ রেকর্ডে ঠাঁই হয়েছে তিন বার। সবথেকে ‘অসফল’ প্রার্থী হিসেবে। এ বারে ‘গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’-এও নিজের নামটি দেখতে চান। ‘অসফল’-এর তালিকায়! শুধু একটি ভয়ই তাড়া করে পদ্মরাজনকে, ‘‘যদি কোনও দিন জিতে যাই, সে দিন আমার মৃত্যু অবধারিত!’’