নতুন কাজের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে রজনীকে।
মাসিক ১০ হাজার টাকার বেতনে ঝাড়ুদারের কাজ করতেন। ঝাড়ুদারের কাজ করা সেই মহিলাই এখন তেলঙ্গানা সরকারের পতঙ্গবিদ!
নাম এ রজনী। তেলঙ্গানার ওয়ারাঙ্গলের বাসিন্দা। শৈশব থেকেই দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে বড় হয়েছেন। বাবা পেশায় খেতমজুর। তবে দারিদ্র রজনীর পড়াশোনাকে দমাতে পারেনি। নিজের অদম্য ইচ্ছায় দারিদ্রকে হার মানিয়ে পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। জৈব রসায়নে স্নাতকোত্তরে প্রথম বিভাগে পাশ করে হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা শুরু করেন। কিন্তু মাঝপথেই তাঁর বিয়ে হয়ে যায় এক আইনজীবীর সঙ্গে। ওয়ারঙ্গল ছেড়ে হায়দরাবাদে চলে যেতে হয় রজনীকে।
বেশ চলছিল সব। কিন্তু হঠাৎই রজনীর মাথার উপর পুরো সংসারের বোঝা নেমে আসে। আইনজীবী স্বামী অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। সন্তান-সহ পাঁচ জনের পরিবার সামলাতে বাধ্য হয়েই কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন সংসারের জোয়াল। সংসার চালাতে সব্জি বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু তাতেও যেন নুন আনতে পান্তা ফুরনোর অবস্থা। এর মধ্যেই খবর পান গ্রেটার হায়দরাবাদ পুরনিগমে চুক্তিভিত্তিক ঝাড়ুদার নেওয়া হচ্ছে। মাসিক বেতন ১০ হাজার টাকা। আর বিন্দুমাত্র ভাবেননি। আবেদন করেছিলেন ওই পদের জন্য। চাকরিটা জুটেও গিয়েছিল।
দুই মেয়ের মা রজনী হাতে ঝাড়ু তুলে নেন। এক জন উচ্চশিক্ষিত মেয়ে ঝাড়ুদারের কাজ করছেন, এই খবরটি স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। সেই খবর পৌঁছয় তেলঙ্গানার পুরসভা বিষয়ক মন্ত্রী কে টি রামারাওয়ের কাছে। তিনি রজনীর সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। যখন জানতে পারেন জৈব রসায়নে প্রথম বিভাগ পেয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন, তখন তিনি রজনীকে সহকারী পতঙ্গবিদ হিসেবে কাজ করার প্রস্তাব দেন। সেই প্রস্তাব পেয়ে কেঁদে ফেলেন রজনী। তাঁকে ওই পদে চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর।