রাতুল পুরীর বিরুদ্ধে আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে চার্জশিট পেশ ইডির। —ফাইল চিত্র
এক রাতে নাইটক্লাবে উড়িয়েছেন ৮ কোটিরও বেশি! মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের ভাইপো রাতুল পুরীর বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের মামলায় এমনই চার্জশিট দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। মার্কিন ওই নাইটক্লাবেই শুধু নয়, চার্জশিটে রাতুলের এ হেন বিলাসবহুল জীবনযাত্রার আরও নজির তুলে ধরেছেন ইডির তদন্তকারীরা। পাশাপাশি রাতুল এবং তাঁর পরিচালিত সংস্থা মোজারবিয়ার ইন্ডিয়া সব মিলিয়ে মোট ৮০০০ কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে বলে চার্জশিটে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থা।
কমল নাথের ভাইপো রাতুল পুরীদের পারিবারিক সংস্থা মোজারবিয়ার ইন্ডিয়া লিমিটেড ২০০৯ সাল পর্যন্ত বভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ নেয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পরে তা ফেরত না দেওয়ায় এ নিয়ে তদন্ত শুরু করে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালের এপ্রিলে মোজারবিয়ারের অ্যাকাউন্টকে ভুয়ো হিসেবে ঘোষণা করে এবং রাতুল পুরী তাঁর বাবা দীপক পুরী এবং মা নীতা পুরীর (তিন জনই ওই সংস্থার ডিরেক্টর) বিরুদ্ধে ৩৫৪ কোটি নয়ছয়ের অভিযোগ দায়ের করেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।
এই সব আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে ইডি। তদন্তের পর ১১০ পাতার যে প্রাথমিক চার্জশিট জমা দিয়েছে, তাতে টাকা নয়ছয় এবং রাতুলের বিলাসবহুল জীবনযাপনের কিছুটা আন্দাজ পাওয়া গিয়েছে। চার্জশিটের একটি অংশে বলা হয়েছে, ‘লেনদেনের নথিপত্র খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। নয়ছয় করা অর্থের অনেকটাই রাতুল খরচ করেছেন দেশ-বিদেশের হোটেল-রিসর্ট-নাইটক্লাবে বিলাসবহুল জীবনযাপনে। তার মধ্যে আমেরিকার একটি নাইটক্লাবে এক রাতেই রাতুল খরচ করেছেন ১১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৯৮০ মার্কিন ডলার, ভারতীয় মূদ্রায় যার মূল্য ৮ কোটি ১৩ লক্ষ টাকারও বেশি।’ ইডির দাবি, ২০১১ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পুরীর ব্যক্তিগত খরচ প্রায় ৩২ কোটি টাকা।
আরও পডু়ন: বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সবার হিসেবেই ভারতের সম্ভাব্য বৃদ্ধির হারে নাটকীয় পতন
আরও পড়ুন: বন্ধু হলেও অর্থনীতির ঝিমুনি কাটাতে নির্মলার নীতি ভুল, জেএনইউ-এ গিয়ে সাফ কথা অভিজিতের
ইডির একটি সূত্রে খবর, তদন্তকারী আধিকারিকরা শুরুতে যা অনুমান করেছিলেন, তার থেকেও অনেক বেশি টাকার দুর্নীতি করেছেন রাতুল। তছরুপের অঙ্ক প্রায় ৮ হাজার কোটি। চার্জশিটে অভিযোগ, মোজারবিয়ার ছাড়াও ‘জটিল কাঠামো’ তৈরি করে একাধিক ভুয়ো সহযোগী সংস্থা (শেল কোম্পানি) খুলে টাকা পাচার করা হয়েছে। মোজারবিয়ার এবং ওই সব সহযোগী সংস্থার বিরুদ্ধেও চার্জশিট দিয়েছে ইডি।
মোজারবিয়ারের পাশাপাশি অগুস্তা-ওয়েস্টল্যান্ড চপার কেলেঙ্কারিতেও নাম জড়িয়েছিল রাতুল পুরীর। সেই মামলাতেই গত ৯ সেপ্টেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। বর্তমানে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন তিনি।