বিরোধী হলে ‘উৎকৃষ্ট’ নয় প্রতিষ্ঠান?

ফের বিতর্কের মুখে বেসরকারি উৎকর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাছাই প্রক্রিয়া। গত বছর মুকেশ অম্বানীর জিও বিশ্ববিদ্যালয়কে জন্মের আগেই উৎকর্ষ প্রতিষ্ঠানের তকমা দিয়ে বিতর্ক বাধিয়েছিল কেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৪৮
Share:

—ফাইল চিত্র।

ফের বিতর্কের মুখে বেসরকারি উৎকর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাছাই প্রক্রিয়া। গত বছর মুকেশ অম্বানীর জিও বিশ্ববিদ্যালয়কে জন্মের আগেই উৎকর্ষ প্রতিষ্ঠানের তকমা দিয়ে বিতর্ক বাধিয়েছিল কেন্দ্র। এ বারের অভিযোগ, বিরোধিতায় সরব প্রতিষ্ঠানগুলিকে উৎকর্ষের মর্যাদা দিতে নীতিগত ভাবে রাজি নয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। যদিও অভিযোগটি অস্বীকার করেছে তারা।

Advertisement

অভিযোগের নেপথ্যে যদিও রয়েছে আইবি-র একটি রিপোর্ট। ওই রিপোর্টে সরকার বিরোধিতায় সরব একাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উঠে এসেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বা তার কর্তারা বিভিন্ন সময়ে সরকারের নীতি বা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব রয়েছেন। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তারা কী ভাবে শাসকবিরোধী সংবাদমাধ্যমের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছেন, তা-ও বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে সরকারের একটি অংশ থেকেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে, যারা বিরোধী শিবিরে রয়েছেন তাদের কেন উৎকর্ষের মর্যাদা দিয়ে আর্থিক সাহায্য করবে কেন্দ্র। যে টাকা বকলমে খরচ হবে মোদী-বিরোধী কাজেই!

সূত্র বলছে, রিপোর্টে উপরের সারিতে আছে অশোক বিশ্ববিদ্যালয়, আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয় ও কেআরইএ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। অশোক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রতাপভানু মেহতা কেন নিয়মিত ভাবে সরকারের সমালোচনায় সরব, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে উইপ্রো-র চেয়ারম্যান আজিম প্রেমজির মনোভাব নিয়েও। ২০১৬ সালে স্মার্টসিটি প্রসঙ্গে প্রেমজি বলেছিলেন, ‘‘স্মার্টসিটি নিয়ে কাজের চেয়ে কথা বেশি হচ্ছে। বাস্তবে এর রূপায়ণ ঠিক ভাবে হচ্ছে না।’’ সূত্রের দাবি, রিপোর্টে প্রেমজির ওই মন্তব্যের যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, তেমনই বলা হয়েছে, সংস্থার টাকার একটি অংশ লগ্নি করা হচ্ছে সরকার-বিরোধী সংবাদমাধ্যমে। একই অভিযোগ অশোক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারপার্সন আশিস ধবনের বিরুদ্ধে।

Advertisement

অভিযোগ, গোয়েন্দাদের নজর থেকে ছাড় পাননি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গর্ভনর রঘুরাম রাজনও। তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের কেআরইএ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন পর্ষদে রয়েছেন। তার সরকার-বিরোধী মনোভাবের উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে। এ ছাড়া প্রশ্ন উঠেছে ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ ইন্সটিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি, গাঁধীনগরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেল্‌থ, দিল্লির জামিয়া হামদর্দ, সোনেপতের ওপি জিন্দল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে। অভিযোগ, রিপোর্টে নেতিবাচক মন্তব্য থাকায় তাদের উৎকর্ষ বিচারের তালিকায় অন্তর্ভুক্তই করা হয়নি।

যদিও এ নিয়ে আজ কোনও মন্তব্য করতে চাননি মন্ত্রী জাভড়েকর। তিনি বিষয়টা ঠেলে দেন কেন্দ্রীয় উচ্চশিক্ষা সচিব আর সুব্রহ্মণ্যমের ঘাড়ে। তিনি আবার কোনও গোয়েন্দা রিপোর্ট রয়েছে, সেটাই মানতে চাননি। তিনি টুইট করেছেন, ‘‘এ ধরনের গোয়েন্দা রিপোর্টের কথা জানা নেই। কোন বিশ্ববিদ্যালয় উৎকর্ষের মর্যাদা পাবে, তা নির্ভর করে সার্বিক গুণমানের উপর। সেই বিচার হবে আগামী কাল ইউজিসি-র বৈঠকে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement