ভিজি সিদ্ধার্থ। ছবি: এএফপি।
কফি বাগান ছিল বাবার। আর ভি জি সিদ্ধার্থ তৈরি করেছিলেন ভারতের সবচেয়ে বড় কফি বারের চেন ‘কাফে কফি ডে’। যার সঙ্গে মার্কিন কফি শপ চেন ‘স্টারবাকস’-এর তুলনা করতেন অনেকে। যে দেশে চা-ই বেশি জনপ্রিয় সেখানে এমন কফি বারের চেন তৈরি করা যে বড় সাফল্য তা মানেন সব শিল্পপতিই।
প্রায় ১৪০ বছর ধরে কফি চাষের ব্যবসা সিদ্ধার্থের পরিবারের। এক সময়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চেয়েছিলেন তিনি। পরে ম্যাঙ্গালুরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার পরে মুম্বইয়ে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৮৪ সালে শুরু করেন নিজের ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সংস্থা। পাশাপাশি কর্নাটকের চিকমাগালুরে কফি বাগান কিনতে তৈরি করেন একটি স্টার্ট আপ সংস্থাও।
এই সময়েই তিনি পারিবারিক কফির ব্যবসাতেও আগ্রহ দেখাতে শুরু করেন। ১৯৯৩ সালে তৈরি করেন একটি কফি ট্রেডিং কোম্পানি। পরে এক জার্মান কফি বার চেনের পরিচালকদের সঙ্গে আলোচনার সূত্রে তাঁর মাথায় আসে ভারতে কফি বার চেন তৈরির পরিকল্পনা।
১৯৯৪ সালে বেঙ্গালুরুর অভিজাত ব্রিগেড রোডে ‘এ লট ক্যান হ্যাপেন ওভার এ কাপ অফ কফি’ ট্যাগলাইন নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে ‘কাফে কফি ডে’। এখন দেশ-বিদেশে ১৭৫০টি কফি শপ আছে তাদের। ২০১৫ সালে বাজারে শেয়ার ছাড়ে ‘কাফে কফি ডে’। বছর ষাটের সিদ্ধার্থের সংস্থা গোটা দক্ষিণ ভারতে ২০০টি দোকানের মাধ্যমে বিক্রি করে কফি ডে পাউডার। ভারত থেকে গ্রিন কফির সবচেয়ে বড় রফতানিকারকও সিদ্ধার্থের সংস্থা।
তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রেও আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছিলেন সিদ্ধার্থ। ১৯৯৯ সালে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ‘মাইন্ডট্রি’-র অন্যতম শেয়ারহোল্ডার হন তিনি। চলতি বছরে ওই সংস্থায় তাঁর শেয়ারের বড় অংশ বিক্রি করে দেন তিনি। সেই লেনদেন থেকে পাওয়া অর্থেই ২৯০০ কোটি টাকার ঋণ মিটিয়েছিলেন তিনি। তবে সিদ্ধার্থের সংস্থার ঋণ ক্রমশই বাড়ছিল বলে তাঁর সংস্থার হিসেবেই প্রকাশ।
২০১৭ সালে অন্য ভাবে বিপাকে পড়েন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণের জামাই সিদ্ধার্থ। তাঁর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ২০টি ভবনে তল্লাশি চালায় আয়কর দফতর।
সিদ্ধার্থ নিখোঁজ হওয়ায় ‘কাফে কফি ডে’-এর ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পড়েছে তাদের শেয়ারের দরও। সিদ্ধার্থের স্ত্রী মল্লিকা হেগড়ে ওই সংস্থার পরিচালন পর্ষদের সদস্য। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে।