CAA

সিএএ: নাগরিকত্বের আবেদন ঘরে বসেই, করা যাবে ফোন থেকেও, পদ্ধতি জানাল কেন্দ্র, খরচ কত?

সোমবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ কার্যকরের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। আর মঙ্গলবারেই নির্দিষ্ট পোর্টালে কী ভাবে আবেদন তা জানিয়ে দিয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৪ ১৮:৩৮
Share:

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে কোনও রকম ধোঁয়াশা রাখতে চায় না কেন্দ্র। এ ব্যাপারে কোথায় কী ভাবে আবেদন করতে হবে তার বিস্তারিত নির্দেশিকা তারা প্রকাশ করা হয়েছে। আবেদন প্রক্রিয়া জানানোর পাশাপাশি কাদের আবেদন করতে হবে তাও জানানো হয়েছে। আবেদন পত্র কোথায় মিলবে, কোনও সরকারি আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করতে হবে কি না, কী ভাবে নাগরিকত্বের শংসাপত্র পাওয়া যাবে, সে ব্যাপারেও বিস্তারিত জানানো হয়েছে।

Advertisement

কী ভাবে আবেদন সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে?

১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ৬বি ধারায় অনলাইনে আবেদন করা যাবে। আবেদনপত্র পাওয়া যাবে কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়েবসাইটে (indiancitizenshiponline.nic.in)। আবার সিএএ-২০১৯ (CAA-2019) নামের মোবাইল অ্যাপেও এই আবেদনপত্র পাওয়া যাবে। ওই অ্যাপের মাধ্যমে মোবাইল ফোন থেকেও আবেদন করতে পারবেন ইচ্ছুকরা। অর্থাৎ ঘরে বসে মোবাইল থেকেই আবেদনের গোটা প্রক্রিয়া হয়ে যাবে।

Advertisement

কাদের নাগরিকত্ব আইনে আবেদন করতে হবে?

আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হিসাবে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিষ্টান ধর্মের মানুষেরা। মূলত আবেদন করতে হবে যাঁরা ওই দেশগুলি থেকে ভারতে এসেছেন ১৯৭১ সালের পরে। প্রসঙ্গত, সেই বছরেই স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম। সেই সময় থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাঁরা ভারতে এসেছেন তাঁরাই সিএএ-র মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাবেন। এর পরে যাঁরা এসেছেন তাঁরা নয়।

নাগরিকত্বের আবেদন কী ভাবে?

আবেদন অনলাইনেই জমা দিতে হবে জেলাস্তরের কমিটি (ডিএলসি) মারফৎ সিএএ সংক্রান্ত এমপাওয়ারড কমিটির কাছে। তার আগে কোন বিভাগে আবেদনপত্র জমা দেবেন, তা জেনে নিতে হবে আবেদনকারীকে। এ ব্যাপারে ওই ওয়েবসাইট অথবা মোবাইল অ্যাপে গেলেই তাঁকে ‘গাইড’ করা হবে। ফর্মেও নানা ভাগ রয়েছে। কাকে কোন বিভাগের জন্য কত নম্বর ফর্ম তুলতে হবে, তা লেখা থাকবে সেখানেই।

কত টাকা লাগবে?

ফর্ম পূরণ করে এবং তাতে উল্লিখিত সমস্ত নথিপত্র দিয়ে অনলাইনে জমা দেওয়ার আগে অনলাইনেই ৫০ টাকা মূল্য দিতে হবে আবেদনকারীকে। এর পরেই তিনি প্রবেশ করবেন আবেদন জমা দেওয়ার পর্বে। আবেদন জমা দেওয়া হলে একটি ডিজিটাল প্রাপ্তিস্বীকার পত্র পাবেন আবেদনকারী।

কেমন নাগরিকত্বের শংসাপত্র চাই?

নাগরিকত্বের ডিজিটাল শংসাপত্র চাই না কি, কাগজের শংসাপত্র প্রয়োজন, তা জানতে চাওয়া হবে। আবেদনকারী কাগজে কলমে সই করা শংসাপত্রের জন্য আবেদন করলে তবেই তা পাবেন। তা না হলে ডিজিটাল শংসাপত্র দেওয়া হবে।

কী ভাবে যাচাই?

আবেদনের ফর্ম জমা করার পর তা যাচাই করবে জেলাস্তরীয় কমিটি (ডিএলসি)। যাচাই হওয়ার পর ডিএলসি ইমেল অথবা এসএমএস মারফত আবেদনকারীকে জানাবে, কবে কখন তাঁকে ডিএলসির কাছে আসল নথিপত্র নিয়ে দেখা করতে হবে।

আনুগত্যের শপথ ও নথি যাচাই

যাচাই সম্পূর্ণ হলে আবেদনকারীকে ভারতের নাগরিকত্ব দিয়ে আনুগত্যের শপথগ্রহণ করাবেন ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক। তবে তথ্যে ঘাটতি হলে আবেদনকারীকে উপযুক্ত নথি জমা করানোর জন্য বলবে ডিএলসি। যদি আবেদনকারী প্রয়োজনীয় নথি জমা করাতে না পারেন অথবা যাচাই প্রক্রিয়ার জন্য সশরীরে উপস্থিত না হন, কিংবা শপথ গ্রহণের জন্য সশরীরে হাজিরা না দেন, তবে ওই আবেদন বাতিল করার জন্য এমপাওয়ারড কমিটির কাছে পাঠানো হতে পারে।

অনলাইনে তথ্যজ্ঞাপন

যাচাই সম্পন্ন হলে অনলাইনে ডিএলসির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সেই তথ্য নিশ্চিত করে জানাবেন। পাশাপাশি আবেদনকারীর শপথগ্রহণের প্রামাণ্য নথিও অনলাইনে জমা করাবেন তিনি। এর পরে যাচাই সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে আবেদনকারীর আবেদনপত্র তিনি পাঠাবেন এমপাওয়ারড কমিটির কাছে।

চূড়ান্ত পর্ব

এমপাওয়ারড কমিটি পুরোটা দেখে সমস্ত তথ্য যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজনে আরও অনুসন্ধান করতেই পারে। সন্তুষ্ট হলেই তারা নাগরিকত্বের আবেদন মঞ্জুর করতে পারে। সন্তুষ্ট না হলে নাকচও করতে পারে।

শংসাপত্র পাওয়া

যদি ডিজিটাল শংসাপত্রের জন্য আবেদন করা হয়, তবে তা অনলাইনেই মিলবে। যদি কাগজে সই করা শংসাপত্রের আবেদন করা হয়, তবে তা সংগ্রহ করতে হবে এমপাওয়ারড কমিটির দফতর থেকে। এটি আসলে রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জনগণনা দফতরের অধিকর্তার দফতর থেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement