কোটিং সেন্টারের সামনের রাস্তা জলমগ্ন। ছবি: সংগৃহীত।
জলের চাপেই কি ভেঙে গিয়েছিল কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টের মূল দরজা, না কি গেট খোলা হয়েছিল? তিন আইএএস পড়ুয়ার জলে ডুবে মৃত্যুর পর এখন এই দু’টি উত্তরের খোঁজ চালাচ্ছে দিল্লি পুলিশ এবং দমকল। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় রাজেন্দ্র নগরের ওই কোচিং সেন্টারের মালিক এবং কো-অর্ডিনেটরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কোচিং সেন্টারের যে বেসমেন্টে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেটি রাস্তা থেকে ৮ ফুট নীচে। সেখানেই ছিল একটি গ্রন্থাগার, গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা। সূত্রের খবর, বৃষ্টির জন্য বেসমেন্টের মূল দরজা আটকে রাখা হয়েছিল। বেসমেন্টে জল যাতে না ঢুকতে পারে তার জন্য ইস্পাতের পুরু একটি শেড লাগানো ছিল। কিন্তু কোচিং সেন্টারের সামনের রাস্তায় বৃষ্টির কারণে কোমরসমান জল জমে গিয়েছিল। বিপুল পরিমাণ সেই জলের চাপ কি ধরে রাখতে পারেনি বেসমেন্টের দরজা? জলের চাপেই কি তা হলে দরজা ভেঙে হু হু করে বেসমেন্টের ভিতরে জল ঢুকে গিয়েছিল?
দ্বিতীয় আরও একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। যে হেতু বেসমেন্টে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা ছিল, তাই দুর্ঘটনার আগে কোনও গাড়ি বার করার জন্য বেসমেন্টের দরজা খোলা হয়েছিল? তার জেরেই কি এই দুর্ঘটনা? এখন পুলিশকে এই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে যে, যদি কোনও গাড়িকে বেসমেন্ট থেকে বার করা হয়, তা হলে দরজা খুলেছিলেন কে? এই দুই প্রশ্নের উত্তর পেতে চাইছে পুলিশ এবং দমকল।
শনিবার বিকেল থেকেই মুষলধারায় বৃষ্টি হচ্ছিল। সন্ধ্যা তখন ৬টা। একটু একটু করে রাস্তার জল জমতে শুরু করে। আধ ঘণ্টার মধ্যেই সেই জলস্তর বেড়ে যায়। রাস্তা ছাড়িয়ে সেই জল ঢুকতে শুরু করে কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে। ওই বেসমেন্টেই রয়েছে কোচিং সেন্টারের গ্রন্থাগার। বেশ বড়সড়। ১৫০ জন বসার মতো জায়গা রয়েছে সেখানে। কিন্তু শনিবার সেখানে ছিলেন ৩০-৩৫ জন আইএএস পড়ুয়া।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, প্রথম দিকে জল খুব ধীরেই ঢুকছিল। কিন্তু আচমকাই সেই জলের স্তর বেড়ে যায়। ২-৩ মিনিটের মধ্যে কোমরসমান জল হয়ে যায়। সঙ্গে জলের টানও বাড়তে থাকে। গ্রন্থাগারের ভিতরে থাকা পড়ুয়ারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এই পরিস্থিতিতে হুলস্থুল পড়ে যায় কোচিং সেন্টারে। কিন্তু জলের স্তর এত দ্রুত বাড়তে শুরু করেছিল যে, পড়ুয়ারা ভিতরেই আটকে পড়েন। দড়ি ফেলে তাঁদের কয়েক জনকে উদ্ধার করেন কোচিং সেন্টারের অন্য পড়ুয়ারা। কিন্তু ১০ মিনিটের মধ্যে বেসমেন্টের ছাদ ছুঁয়ে ফেলেছিল জল। সেই ঘটনায় তিন আইএএস পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে।