দিল্লির কোচিং সেন্টারের সামনে পুলিশ। ছবি: এক্স।
বেআইনি ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল বেসমেন্ট? দিল্লির রাজেন্দ্রনগরের কোচিং সেন্টার নিয়ে উঠছে এমন অনেক প্রশ্ন। ইতিমধ্যে সেখানকার মালিক এবং কো-অর্ডিনেটরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কী ভাবে এমন দুর্ঘটনা ঘটল, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
রাজেন্দ্রনগরের ওই কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে বৃষ্টির জল ঢুকে তিন জন আইএএস পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। এনডিটিভি জানিয়েছে, কোচিং সেন্টারটির বেসমেন্ট বেআইনি ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। ২০২১ সালের অগস্ট মাসে দিল্লি পুরসভার কাছ থেকে কোচিং চালানোর অনুমতি পেয়েছিল ওই সংস্থা। সেই সংক্রান্ত নথিতে লেখা রয়েছে, বেসমেন্ট শুধু গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ব্যবহার করা যাবে। এ ছাড়া গৃহস্থের জিনিসপত্র গুদামজাত করা যাবে সেখানে। তবে অন্য কাজে ব্যবহারের অনুমতি ছিল না।
জানা গিয়েছে, চলতি মাসেই দিল্লির দমকল দফতরের কাছ থেকে ছাড়পত্র পেয়েছিল ওই কোচিং সেন্টার। সেই সংক্রান্ত নথিতে বলা হয়েছে, কোচিং সেন্টারটিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে। তবে বেসমেন্ট আবাসনের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে। সেই নিয়মের খাতায় যা রয়েছে, তা-ও মানা হয়নি বলে অভিযোগ। নথি অনুযায়ী, বেসমেন্টে উপযুক্ত নিকাশি ব্যবস্থা রাখতে হবে। যদি কোনও কারণে বেসমেন্ট ব্যবসার কাজে ব্যবহার করতে হয়, তবে রাখতে হবে ঢোকার এবং বেরোনোর জন্য একাধিক দরজা। কিন্তু রাজেন্দ্রনগরের কোচিং সেন্টারে ঢোকার এবং বেরোনোর জন্য একটি মাত্র দরজা ছিল বলে অভিযোগ।
বেসমেন্টে লাইব্রেরি তৈরি করেছিলেন কোচিং কর্তৃপক্ষ। নিয়মিত সেখানে পড়তে যেতেন ছাত্রছাত্রীরা। এ ছাড়া একটি শ্রেণিকক্ষও ছিল, যেখানে মাঝেমাঝে ক্লাস নেওয়া হত। বেসমেন্টে এর মাঝেই ছিল গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।
দিল্লিতে গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি চলছে। শনিবার সন্ধ্যায় অত্যধিক বৃষ্টির কারণে রাস্তায় জল জমে গিয়েছিল। বেসমেন্টের ওই লাইব্রেরিতে পড়তে গিয়েছিলেন অন্তত ৩০ জন ছাত্রছাত্রী। অন্যান্য দিন সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে লাইব্রেরি বন্ধ হয়ে গেলেও শনিবার তা বন্ধ করা যায়নি। কিছু ক্ষণ পর বেসমেন্টে হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যে লাইব্রেরি জলে ভরে ওঠে। ছাত্রছাত্রীরা অনেকেই সেখান থেকে বেরোনোর সময় পাননি। অনেককে দড়ির সাহায্যে টেনে তুলতে হয়েছে। তিন জন পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার করা হয় ওই জমা জল থেকে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার রাত থেকেই কোচিং সেন্টারের বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পড়ুয়ারা। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। শাসকদলকেই এই ধরনের অব্যবস্থার জন্য দায়ী করেছে বিজেপি। দিল্লির আপ সরকার ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।