দেওয়ানি বিধি কী ভাবে, প্রশ্ন

গত বছর সুপ্রিম কোর্টের রায় সত্ত্বেও সব বয়সের মহিলাদের শবরীমালা মন্দিরে পুজো দেওয়া রুখতে পথে নেমেছিল বিজেপি। সেটি কি উল্টো অবস্থান নয়? 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।

জম্মু-কাশ্মীরের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ হয়েছে। অযোধ্যায় রামমন্দিরের পথও এখন প্রশস্ত। এ বার কী? অভিন্ন দেওয়ানি বিধি?

Advertisement

এই তিন বিষয়কে কয়েক দশক ধরে ‘প্রধান কর্মসূচি’ হিসেবে মেলে ধরেছে গেরুয়া শিবির। রাজনাথ সিংহও নাকি অযোধ্যা রায়ের পরে কোথাও বলে ফেলেছেন, অভিন্ন বিধির সময় এসে গিয়েছে। যদিও পরে তা খণ্ডন করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি দিল্লিতেই ঐকমত্যের ভিত্তিতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে সওয়াল করে গিয়েছেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। শবরীমালা নিয়ে সঙ্ঘ ও বিজেপির অবস্থানের পরে প্রশ্ন উঠেছে, সেটি কি অভিন্ন বিধির পরিপন্থী নয়? তিন তালাকের পরে গোটা বিজেপি লিঙ্গবৈষম্য দূর করা, নারীদের সমান অধিকারের পক্ষে প্রচার করেছে। কিন্তু গত বছর সুপ্রিম কোর্টের রায় সত্ত্বেও সব বয়সের মহিলাদের শবরীমালা মন্দিরে পুজো দেওয়া রুখতে পথে নেমেছিল বিজেপি। সেটি কি উল্টো অবস্থান নয়?

আজ রাফালের রায় নিয়েই বেশি ব্যস্ত ছিল বিজেপি। শবরীমালায় নারীদের প্রবেশাধিকারের মামলাটি বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানো নিয়ে বেশি শোরগোল করতে চায়নি তারা। কিন্তু ব্যাখ্যা দিল আরএসএস। বিবৃতি দিয়ে বলল, ‘‘শবরীমালা মন্দিরে বিশেষ বয়সের মহিলাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে লিঙ্গবৈষম্যের সম্পর্ক নেই। এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র দেবতার বৈশিষ্টের জন্য।’’ এর পরেই সঙ্ঘ বলেছে, ‘‘আমাদের দৃঢ় মত, এই মামলায় বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা সংবিধান-প্রদত্ত উপাসনার স্বাধীনতার ভাবনার পরিপন্থী। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতই চূড়ান্ত বলে ধরা উচিত।’’

Advertisement

কয়েক দিন আগে সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি দীপক গুপ্ত এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর বেঞ্চ একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। বিচারপতিরা বলেছিলেন, ‘‘দেশের সব অংশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রণয়ন করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেটি করা হয়নি।’’ মুসলিম মহিলাদের একটি অংশও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আনার দাবিতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের দ্বারস্থ হচ্ছেন। কিন্তু বিজেপিরই অনেকে এখন ঘরোয়া স্তরে কবুল করছেন, গোটা দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা ততটা সহজ কাজ নয়। এর স্বরূপ কী হবে, তা-ও স্পষ্ট নয়। সরকারের কাছে বরং এখন অগ্রাধিকার, নাগরিকপঞ্জি চালু করা। সেই লক্ষ্যে নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী বিলটি সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে আনা হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement