সূচনা শেঠ। ছবি: সংগৃহীত।
চার ঘণ্টার যানজট। আর তাতেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান চার বছরের শিশুপুত্রকে খুনে অভিযুক্ত সূচনা শেঠ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সূচনা শিশুপুত্রের দেহ সুটকেসে ভরে গোয়া থেকে দ্রুত বেঙ্গালুরু পৌঁছনোর চেষ্টা করছিলেন। গোয়ার অ্যাপার্টমেন্ট কর্তৃপক্ষের তরফে অভিযোগ পাওয়ার পরেই তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল পুলিশও। কিন্তু পুলিশ সক্রিয় হওয়ার আগে সূচনার ভাড়ার গাড়ি তাঁকে নিয়ে অনেকটা পথ এগিয়ে যায়।
কিন্তু পুলিশ সূচনার নাগাল পেল কী ভাবে? ওই সূত্রের খবর, গোয়ার চোরলা ঘাট এলাকায় একটি পথ দুর্ঘটনার কারণে দীর্ঘ সময় ধরে যানজট শুরু হয়। প্রায় চার ঘণ্টা ওই যানজটের মধ্যে আটকে পড়ে সূচনার গাড়িও। ফলে তাঁকে গ্রেফতার করার কাজটা সহজ হয়ে যায় পুলিশের কাছে। বেঙ্গালুরুর চিত্রদুর্গ থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সূচনা বেঙ্গালুরুতে গিয়ে শিশুপুত্রের দেহটি লোপাট করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। চোরলা ঘাট এলাকাটি এমনিতেই জনবহুল। গোয়া, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র— এই তিন রাজ্যের সংযোগস্থলে এলাকাটি অবস্থিত। কর্নাটকের বেলগাম এই শহর থেকে মাত্র ৫৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
প্রাথমিক ভাবে তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ছেলেকে হত্যার পর নিজেও গোয়ার অ্যাপার্টমেন্টটিতে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন বেঙ্গালুরুর একটি স্টার্ট আপ সংস্থার সিইও সূচনা। ব্লেড দিয়ে নিজের হাত কাটার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তবে ঘরে যে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে, তা তাঁরই রক্ত কি না, তা এখনও নিশ্চিত করেনি পুলিশ। সূচনা অবশ্য ছেলেকে খুনের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি জেরার মুখে পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি খুন করেননি। ঘুম থেকে উঠে ছেলেকে মৃত অবস্থায় পান মা। তার পর কী করবেন বুঝতে না পেরে সুটকেসে দেহ ভরে বেঙ্গালুরু ফেরার তোড়জোড় করেন।
গোয়া থেকে বেঙ্গালুরু ফেরার জন্য ৩০ হাজার টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করেছিলেন সূচনা। তাঁর স্বামী বেঙ্কট রমনের সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। ওই মামলায় বেঙ্কটকে রবিবার করে সন্তানের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিয়েছিল আদালত। পুলিশের অনুমান, তাতে খুশি হতে পারেননি সূচনা। শিশুটিকে যে দিন খুন করা হয়, তার এক দিন পরেই বাবার সঙ্গে তার দেখা হওয়ার কথা ছিল। বাবার সঙ্গে দেখা করতে দেবেন না বলেই কি ছেলেকে হত্যা করেন মা? উত্তর খুঁজছে পুলিশ। সূচনাকে গোয়ার একটি আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাঁকে ছ’দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।