Aam Aadmi Party

কেন আপ ছাড়লেন কৈলাস? দিল্লির সরকারের ‘ব্যর্থতা’র কথা মুখে বললেও ‘ক্ষত’ অনেক গভীরে!

স্বাধীনতা দিবসে রাজ্যের সরকারি অনুষ্ঠানে পতাকা উত্তোলনের দায়িত্ব থাকে মুখ্যমন্ত্রীর উপর। কিন্তু এ বছর কেজরীওয়াল জেলে থাকায় তাঁর বদলে কে পতাকা উত্তোলন করবেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:২৪
Share:

(বাঁ দিকে) অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং কৈলাস গহলৌত (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

রবিবার দিল্লির রাজনীতিতে শোরগোল ফেলেছেন কৈলাস গহলৌত। আম আদমি পার্টি (আপ) ছেড়ে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেন তিনি। দল ছাড়ার নেপথ্যে, আপ সরকারের ‘ব্যর্থতা’কেই দায়ী করেছেন তিনি। কিন্তু শুধু কি সেই কারণেই দল ছাড়লেন কৈলাস? অনেকের মতে, ‘ক্ষত’ অনেক গভীরে!

Advertisement

আবগারি মামলায় অরবিন্দ কেজরীওয়াল জেলে যাওয়ার পর থেকেই দিল্লির মন্ত্রিসভায় গুরুত্ব বৃদ্ধি হতে থাকে অতিশীর। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া তাঁকে। পুরোটাই ঘটেছে কেজরীওয়ালের নির্দেশে। গত বছর ডিসেম্বরে কৈলাসের থেকে আইন মন্ত্রক ‘কেড়ে’ নিয়ে অতিশীকে দিয়েছিলেন কেজরীওয়াল। সেই থেকে মন কষাকষি শুরু। যা ‘বড়’ আকার নেয় চলতি বছরের স্বাধীনতা দিবসে পতাকা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে।

স্বাধীনতা দিবসে রাজ্যের সরকারি অনুষ্ঠানে পতাকা উত্তোলনের দায়িত্ব থাকে মুখ্যমন্ত্রীর উপর। কিন্তু এ বছর কেজরীওয়াল জেলে থাকায় তাঁর বদলে কে পতাকা উত্তোলন করবেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। তবে, জেলবন্দি কেজরীওয়াল নির্দেশ দিয়েছিলেন, অতিশীই পতাকা উত্তোলন করবেন। কিন্তু তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। দিল্লির লেফটেন্যান্ট গর্ভনর ভিকে সাক্সেনা জানান, অতিশী নয়, পতাকা তুলবেন কৈলাস। কারণ হিসাবে সাক্সেনা দেখান, দিল্লির স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্ব যখন কৈলাসের হাতে, তখন তিনিই পতাকা উত্তোলন করবেন! তা নিয়ে প্রকাশ্যেই উপরাজ্যপালের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন আপের নেতানেত্রীরা। সাক্সেনার বিরুদ্ধে ‘পক্ষপাতিত্বের’ অভিযোগ তোলেন তাঁরা। লেফটেন্যান্ট গর্ভনরের পদক্ষেপকে ‘তুচ্ছ রাজনীতি’ বলে মন্তব্য করেন অতিশী। পরোক্ষ ভাবে কৈলাসকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি তিনি। এমনকি, কেজরীওয়াল জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে কৈলাসের সঙ্গে সাক্ষাতের খবরও মেলেনি।

Advertisement

উল্লেখ্য, বছর পঞ্চাশের কৈলাস দীর্ঘ দিন আপের সঙ্গে যুক্ত। সরকারে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। দিল্লি সরকারের স্বরাষ্ট্র, পরিবহণ, তথ্যপ্রযুক্তি এবং নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন তিনি। দিল্লির মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অতিশীকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। সেই চিঠির ছত্রে ছত্রে সরকারের বিপথগামী হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন কৈলাস।

তাঁর মতে, দলের অন্দরেই একাধিক ‘কঠিন চ্যালেঞ্জ’-এর মুখে পড়তে হচ্ছে আপকে। তিনি লিখেছেন, “সাধারণ মানুষকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভুলে গিয়ে রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণের কথা ভাবা হচ্ছে। ফলে অনেক প্রতিশ্রুতিই অপূর্ণ থেকে যাচ্ছে।” উদাহরণ হিসাবে যমুনা নদীর দূষণ পরিস্থিতির কথাও ইস্তফাপত্রে তুলে ধরেছেন কৈলাস। তাঁর অভিযোগ, আপ নিজস্ব রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য লড়াই করছে। সেই কারণে দিল্লির সাধারণ মানুষ ন্যূনতম নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কৈলাস লিখেছেন, কেন্দ্রের সঙ্গে লড়াই করতেই যদি দিল্লির সরকার অর্ধেকের বেশি সময় কাটিয়ে দেয়, তা হলে দিল্লিতে প্রকৃত উন্নয়ন কখনোই হবে না। দল এবং সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কথা জানিয়ে ইস্তফা দিয়েছেন কৈলাস। তবে, আপ নেতাদের একাংশের মতে, বিজেপির চাপের মু‌খেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কৈলাস। তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। সূত্রের দাবি, বিজেপিতে যেতে পারেন কৈলাস।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement