একই বাড়িতে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় এই ১১ জনের। —ফাইল চিত্র
এত দিন পরিচয় ছিল ‘ভৌতিক’ বাড়ি বলে। দেড় বছর তালাবন্ধ থাকার পর, এ বার সেখানে মানুষের পা পড়তে চলেছে।
২০১৮ সালের পয়লা জুলাইয়ের ঘটনা। রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়েছিল দিল্লির বুরারির চুন্দাবত পরিবারের ১১ জন সদস্যের। হাড় হিম করা সেই ঘটনায় শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ। তার পর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থাতেই ছিল ওই ‘কুখ্যাত’ বাড়ি। এ বার ওই বাড়িতে ভাড়াটে হিসাবে থাকতে চলেছেন বুরারিই এক প্যাথলজিস্ট মনমোহন কাশ্যপ।
অনেকটা সময় কাটলেও, বুবারির ওই ঘটনা এখনও দুঃস্বপ্নের মতোই তাড়া করে বেড়াচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। আর বাড়িটা নিয়ে অনেক গালগল্প ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে এলাকা জুড়ে। এ সব খবর জানেন মনমোহন কাশ্যপও। কিন্তু, সব কুসংস্কার ও ভয় উড়িয়ে দিয়েই তিনি বলছেন, ‘‘আমি ভূতে বিশ্বাস করি না। আমি জানি যে, এমন একটা বাড়ি পাচ্ছি যেটা আমার বাজেটে আঁটবে।’’ বাড়ির নীচের তলায় একটি প্যাথলজি সেন্টার খুলতে চান তিনি। তাঁর সঙ্গে ওই বাড়িতে থাকবেন স্ত্রী ও দুই সন্তানও।
আরও পড়ুন: রিংয়েই দিলেন জবাব, জারিনকে হারিয়ে হাতও মেলালেন না মেরি কম
আত্মীয়দের রহস্যজনক ভাবে মৃত্যুর পর ওই বাড়ির উত্তরাধিকার পেয়েছিলেন চুন্দাবত পরিবারেরই আর এক সদস্য দীনেশ সিংহ চুন্দাবত। তিনি চিত্তোরগড়ের বাসিন্দা। বহু দিন ধরেই ওই বাড়ি বিক্রি করতে চাইছিলেন তিনি। কিন্তু, ‘ভৌতিক’ বলে ‘বদনাম’ রটায় ক্রেতা পাচ্ছিলেন না। কখনও ক্রেতা রাজি হলেও উপযুক্ত দাম পাচ্ছিলেন না। তাঁর কথায়, ‘‘গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আমি ভাড়াটে খুঁজছিলাম। কিন্তু, প্রতিবেশীদের অনেকেই এটা ভৌতিক বাড়ি বলে এমন গুজব ছড়িয়েছিলেন যে কেউই রাজি হচ্ছিলেন না।’’ দীনেশের দাবি, ‘‘এক জন দোকানদার আগাম টাকাও দিয়েছিলেন। কিন্তু, ‘ভৌতিক’ বাড়ি শুনে টাকা ফেরত নিয়ে নেন তিনি।’’ শেষ পর্যন্ত হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন দীনেশ। অবশেষে ওই বাড়ি ভা়ডা নিতে রাজি হন মনমোহন। তবে, বরাবর দীনেশের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ওই এলাকারই বাসিন্দা, সমাজকর্মী বীরেন্দ্র ত্যাগী। তিনি বলেন, ‘‘গত নভেম্বরে বাড়ি দেখতে আসেন মনমোহন। আমি ভেবেছিলাম যে ওঁকে বলতে হবে এই বাড়িতে কোনও ভূত নেই। কিন্তু, তিনি বাড়িটি সাফসুতরো কিনা তা নিয়েই চিন্তিত ছিলেন।’’
আরও পড়ুন: রাজ্যপালকে চিঠি দিলেন মমতা, ধনখড় বললেন ‘গণতন্ত্রে এটাই কাম্য’
বর্তমানে ভজনপুরা এলাকায় থাকেন মনমোহন কাশ্যপ। সেখান থেকে তাঁর সন্তানদের স্কুল কিছুটা দূরে। সেই স্কুল কাছে হবে বুরারির ওই বাড়িতে গেলে। এত দিন ধরে পরিত্যক্ত থাকা ওই বাড়িতে আপাতত সংস্কারের কাজ চলছে। বাড়ি ভাড়া মাসে ২৫ হাজার টাকা। নতুন বাড়িতে পা দিতে মুখিয়ে রয়েছেন মনমোহন ও তাঁর পরিবার। তিনি বলছেন, ‘‘ভাড়ার চুক্তি হলে গেলেই নতুন বাড়িতে আমরা থাকতে শুরু করব।’’