এই রথেই আগুন ধরে মৃত্যু হয় সাত জনের। —টুইটার।
ত্রিপুরার ভয়াবহ রথ দুর্ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। বুধবার রাতে ঘটনাস্থলে যান তিনি। হাসপাতালে আহতদের সঙ্গেও দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেই সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে তিনি জানান, এই ঘটনায় জেলাশাসক পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আলাদা করে এই ঘটনার তদন্ত করছে রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরও। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী রতনলাল নাথ সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন, ত্রিপুরা বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে তদন্ত করে সবিস্তার রিপোর্ট জমা করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ ত্রিপুরার উনকোটি জেলার কুমারঘাটে উল্টোরথ যাত্রার সময় রথের চূড়া একটি উঁচু বৈদ্যুতিক তারে স্পর্শ করলে সেটিতে আগুন লেগে যায়। রাজ্য প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, ওই ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তিন শিশু, তিন মহিলা-সহ মোট সাত জনের। গুরুতর জখম হন ১৬ জন। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, আগুনে ঝলসে যাচ্ছে শিশু এবং নারীদের দেহ। যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
হাসপাতালে আহতদের দেখে বেরিয়ে আসার পর ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী জানান, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে চার লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আহত ব্যক্তি, যাঁদের দেহের ৬০ শতাংশ আগুনে পুড়ে গিয়েছে, তাঁদের আড়াই লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। তুলনায় অল্প জখমদের দেওয়া হবে ৭৫ হাজার টাকা। অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে নিহতদের ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গোটা ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী। শোকপ্রকাশ করেছেন ত্রিপুরার বিরোধী দল তিপ্রা মথার প্রধান প্রদ্যোৎ কিশোর মাণিক্য দেববর্মা এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশিসকুমার সাহা। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যের উনকোটি জেলার জেলাশাসক গোটা ঘটনার তদন্ত করবেন। গোটা ঘটনায় কোনও গাফিলতি বা গলদ থাকলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ‘উপযুক্ত পদক্ষেপ’ করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
গত বছরও ত্রিপুরার শান্তিরবাজার এলাকায় রথযাত্রার সময় একটি দুর্ঘটনায় চার জন আহত হন। আবার গোমতী জেলার উদয়পুরে রথের চূড়া ভেঙে পড়ে বেশ কয়েক জন আহত হন।