উৎসবের মরসুমে জমায়েত। ছবি—পিটিআই।
সামনেই উৎসবের মরসুম। সেই সময় দেশের কোভিড সংক্রমণ পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায় সে ব্যাপারে সব রাজ্যকে সতর্ক করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা সব রাজ্যকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। বিভিন্ন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবদের পাঠানো চিঠিতে উৎসবের সময় কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এক গুচ্ছ নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। তবে উৎসবের কথা বলা হলেও কেন্দ্রের এই নির্দেশ পশ্চিমবঙ্গে উপনির্বাচন ঘোষণার সিদ্ধান্তেও প্রভাব ফেলবে কি? এমন প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।
কেরল ছাড়া দেশের বাকি রাজ্যগুলিতে সংক্রমণ পরিস্থিতি আগের থেকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আর কেরলের অন্যতম প্রধান উৎসব ওনামের পরেই পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে বলে পরিসংখ্যানেই দেখা যাচ্ছে। অক্টোবর মাসজুড়ে গোটা দেশেই চলবে নানা উৎসব। তার আগে বিভিন্ন রাজ্যের কিছু কিছু জেলায় পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। যে সব জেলায় সংক্রমণের হার বেশি বা সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে সেখানে স্থানীয় প্রশাসনকে কড়া হাতে সংক্রমণ মোকাবিলার নির্দেশ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে কেন্দ্রের পাঠানো চিঠিতে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, উৎসবের মরসুমে বড় জমায়েত এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে সব রাজ্যকে।
দেশের অধিকাংশ রাজ্যেই লকডাউনের কড়াকড়ি বা বিধিনিষেধ উঠে গিয়েছে। এর জেরে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাবও প্রকট হয়েছে। অনেকে জায়গাতেই সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক ব্যবহার কমার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বাজারে বা গণ পরিবহনে দূরত্ববিধিও শিকেয় উঠেছে। এই শিথিলতা কড়া হাতে মোকাবিলার কথাও বলেছে কেন্দ্র। কোভিড-বিধি যাতে যথাযথ ভাবে পালন করা হয় সে জন্য স্বরাষ্ট্রসচিবদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে জরিমানা করার বিষয়েরও উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে। সেই সঙ্গে টিকাকরণ বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে।
কেন্দ্রের এই চিঠি রাজ্যের সাত আসনে উপনির্বাচনের সম্ভাবনাতেও কাঁটা হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সাত আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজরে ভবানীপুর। কারণ, তৃণমূলের ঘোষণা মতো ওই আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী হবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুজো এবং করোনা তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা বাড়ার আগেই সেই ভোটপর্ব মিটিয়ে ফেলার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনকেও দলের মত জানানো হয়েছে। অন্য দিকে, বিজেপি ৫ নভেম্বরের আগে উপনির্বাচন চাইছে না। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে ছ’মাসের মধ্যে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। আর সেই ছ’মাস পূর্ণ হচ্ছে ৫ নভেম্বর। এই নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই কেন্দ্রের এই চিঠি বিজেপি-র দাবিকে জোরালো করতে পারে। কারণ, রাজ্য বিজেপি যে সব যুক্তিতে এখনই উপনির্বাচন না করার পক্ষে মত দিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ দেখানো হয়েছে করোনা পরিস্থিতি।