Delhi Election Results 2025

অর্ধেক আকাশেই দিল্লির পালাবদল! কাকতালীয় হলেও সুষমা, শীলা এবং আতিশীর আমলেই বদল

দিল্লির বিধানসভা ভোটে এ পর্যন্ত তিন বার ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছে। ঘটনাচক্রে, তিন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, শীলা দীক্ষিত এবং আতিশী মার্লেনার সময়ই বদলেছে সরকার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:০৪
Share:
History of the Chiff Mimister of Delhi, Sushma Swaraj, Sheila Dikshit and Atishi Marlena

(বাঁ দিক থেকে) সুষমা স্বরাজ, শীলা দীক্ষিত এবং আতিশী মার্লেনা। —ফাইল ছবি।

১৯৯৮: সুষমা স্বরাজ। ২০১৩: শীলা দীক্ষিত। ২০২৫: আতিশী মার্লেনা। দিল্লির নির্বাচনী ইতিহাস বলছে, সেখানে এ নিয়ে তিন বার বিধানসভা ভোটে ক্ষমতাসীন দল পরাস্ত হল। একেবারেই কাকতালীয়। কিন্তু তিন বারই মহিলা মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকাকালীন হল ক্ষমতার পালাবদল। বিজেপি এবং কংগ্রেসের পরে সেই ধারা বজায় রইল আম আদমি পার্টির (আপ) ক্ষেত্রেও।

Advertisement

স্বাধীনতার পরে প্রাথমিক ভাবে স্বতন্ত্র রাজ্য ছিল দিল্লি। ১৯৫২ সালের বিধানসভা ভোটে ৪৮টি আসনের মধ্যে ৩৯টিতে জিতে ক্ষমতা দখল করেছিল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর ঘনিষ্ঠ স্বাধীনতা সংগ্রামী ব্রহ্ম প্রকাশ। তিন বছরের মাথায় তাঁকে সরিয়ে শিখ নেতা গুরমুখ নিহাল সিংহকে মুখ্যমন্ত্রী করে কংগ্রেস হাইকমান্ড। কিন্তু ১৯৫৬ সালে দিল্লিকে ‘কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল’ ঘোষণা করে বিধানসভা বিলুপ্ত করা হয়।

তার প্রায় চার দশক পরে ১৯৯৩ সালে প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাওয়ের সরকার দিল্লিকে ‘জাতীয় রাজধানী অঞ্চল’ ঘোষণা করে ৭০ সদস্যের বিধানসভা গঠন করে। সে বছরের নির্বাচনে ৪৯টি আসনে জিতে দিল্লিতে সরকার গড়েছিল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন মদনলাল খুরানা। কিন্তু গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিয়ে ব্যর্থ হওয়ায় ১৯৯৬ সালে খুরানাকে সরিয়ে সাহিব সিংহ বর্মাকে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব দেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। তাতে অবশ্য সমস্যা মেটেনি। শেষ পর্যন্ত ১৯৯৮ সালের অক্টোবরে বিধানসভা ভোটের মাত্র দু’মাস আগে সুষমাকে মুখ্যমন্ত্রী করে লড়তে নেমেছিল পদ্মশিবির। কিন্তু সেই ভোটে ভরাডুবি হয় তাদের। হাউজ় খাস আসনে সুষমা নিজে জিতলেও তাঁর দলের ঝুলিতে গিয়েছিল মাত্র ১৫টি আসন। ৫২টি আসনে জিতে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পায় কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হন শীলা দীক্ষিত। সে বারের ভোটে গোল মার্কেট আসনে বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদকে হারিয়েছিলেন শীলা। যে কীর্তি বর্তমানে বর্ধমান-দুর্গাপুরের তৃণমূল সাংসদ।

Advertisement

দেড় দশক মুখ্যমন্ত্রিত্ব সামলানোর পরে শীলা অবশ্য নিজেও জিততে পারেননি। ২০১৩ সালের বিধানসভা ভোটে নয়াদিল্লি আসনে আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়ালের কাছে ২৫ হাজারেরও বেশি ভোটে পরাস্ত হন তিনি। যদিও ২০০৩ এবং ২০০৮ সালের ভোটে শীলার নেতৃত্বেই জয়ের ‘হ্যাটট্রিক’ করেছিল কংগ্রেস। ১৯৯৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে শীলা যে রাজধানীর ভোলবদলের কারিগর হিসেবে কাজ করেছিলেন, সে কথা দলমতনির্বিশেষে অনেকেই স্বীকার করেন। দিল্লি মেট্রো থেকে রাজধানীর গণপরিবহণে সিএনজি-চালিত গাড়ির প্রচলনের মতো নানা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় তাঁর আমলেই।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত কমনওয়েল্‌থ গেমস দুর্নীতি-কাণ্ডে জনপ্রিয়তা খুইয়েছিল তাঁর সরকার। আর অণ্ণা হজারের আন্দোলনে সওয়ার হয়ে কেজরীওয়াল সেই শূন্যস্থান পূরণ করেছিলেন।১৯৯৮ সালে দিল্লি বিধানসভা ভোটে বিজেপির হার সত্ত্বেও জাতীয় রাজনীতিতে উত্থান হয়েছিল সুষমার। কিন্তু শীলা পরাজয়ের পরে ধীরে ধীরে সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। এই বিধানসভা ভোটে অরবিন্দ কেজরীওয়াল, মণীশ সিসৌদিয়া, সত্যেন্দ্র জৈন, সৌরভ ভরদ্বাজ, সোমনাথ ভারতীর মতো আপ প্রার্থীরা পরাস্ত হলেও ব্যতিক্রম আতিশী। রাজনীতি কি তাঁকে ‘প্রত্যাবর্তন’ করার সুযোগ দেবে?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement