Babri Masjid

‘ঐতিহাসিক ভুল শুধরে নিয়েছিলাম’, বাবরি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর করসেবকরা মিলে বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয়। সেই দিন তিনিও করসেবকদের দলে শামিল ছিলেন বলে জানান জাভড়েকর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২১ ১৩:১৮
Share:

অন্যায় ভাবে বাবরি মসজিদ ভেঙে দেওয়া হয়েছিল, অযোধ্যা রায়ে সে কথা মেনেছে সুপ্রিম কোর্টও। কিন্তু কোনও অন্যায় তো নয়ই, উল্টে বাবরি ভেঙে ‘ঐতিহাসিক ভুল’ শুধরে নেওয়া হয়েছে বলে এ বার মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। শুধু তাই নয়, যে দিন বাবরি ভেঙে দেওয়া হয়, সে দিন করসেবকদের দলে তিনিও শামিল ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

তাঁর এই মন্তব্যে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। জাভড়েকরকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র আক্রমণ করেছেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম) সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘মন্দির ভেঙে মসজিদ গড়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে মসজিদ ভাঙা হয়েছিল বলেও জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত আবার বলেছিল, ষড়যন্ত্র করে বাবরি ভাঙা হয়েছিল, এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। এখন যেমন গর্ববোধ করছেন, সে ভাবেই আদালতে স্বীকারোক্তি দিলেন না কেন? অত্যন্ত লজ্জাজনক ব্যাপার’।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তার জন্য দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে অর্থ সংগ্রহ। মন্দির নির্মাণের জন্য যাঁরা মুক্তহস্তে দান করেছেন, তাঁদের সম্মান জানাতে সম্প্রতি দিল্লিতে বিজেপির দফতরে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। সেখানেই বাবরি প্রসঙ্গ টেনে আনেন জাভড়েকর।

Advertisement

মন্দির ভেঙে অযোধ্যার ওই বিতর্কিত জায়গায় মসজিদ তৈরি হয়েছিল এমন কোনও প্রমাণ নেই বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। কিন্তু জাভড়েকর বলেন, ‘‘লক্ষ লক্ষ মন্দির থাকতে বেছে বেছে রামমন্দিরই কেন ভেঙেছিলেন বাবর জানেন? কারণ উনি বুঝতে পেরেছিলেন রামমন্দিরেই দেশের প্রাণভোমরা লুকিয়ে রয়েছে। তাই রামমন্দির ভেঙে দিয়েছিলেন উনি। পরে ওই বিতর্কিত জায়গায় মসজিদ বানানো হয়। কিন্তু জায়গাটা বিতর্কিত নয়। কারণ ওখানে কোনও কালে মসজিদ ছিলই না। যেখানে উপাসনা হয় না, সেখানে মসজিদ থাকতেই পারে না। ওই কাঠামোটাই বিতর্কিত ছিল।’’

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর করসেবকরা মিলে বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয়। সেই দিন তিনিও করসেবকদের দলে শামিল ছিলেন বলে জানান জাভড়েকর। প্রকাশ বলেন, ‘‘১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বরের ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী আমি। সেই সময় যুব মোর্চার অংশ ছিলাম। করসেবক হিসেবে অযোধ্যায় ছিলাম ওই দিন। লক্ষ লক্ষ করসেবকদের সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলাম আমিও। আগের দিন ওখানেই রাত কাটিয়েছিলাম আমরা। তখনও তিনটি গম্বুজ দেখা যাচ্ছিল। তার পর দিনই গোটা পৃথিবী দেখল, কী ভাবে ঐতিহাসিক ভুল শুধরে নেওয়া হল।’’ জাভড়েকরের এই বক্তৃতার ভিডিয়ো তুলে ধরে টুইটারে সরব হয়েছেন আসাদউদ্দিন।

সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে মন্দির নির্মাণে অনুমতি মেলার পর ২০২০ সালের ৫ অগস্ট অযোধ্যার ওই বিতর্কিত জমিতে প্রস্তাবিত রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পর সিবিআই আদালতে বাবরি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়ে যান লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলি মনোহর জোশী, উমা ভারতীরা। মসজিদ ভাঙার ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত ছিল না বলে মন্তব্য করে আদালত। কিন্তু জাভড়েকরের মন্তব্য তার পরিপন্থী বলেই মনে করছেন অনেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement