খ্রিস্টানরা নিশানায় কেন, ক্ষুব্ধ যাজকরা

দু’টি ঘটনাই ঘটেছে বিজেপি শাসিত রাজ্যে। কিন্তু কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই মুখ খোলেননি। পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে দায় সেরেছে রাজ্য প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৫
Share:

—রয়টার্সের তোলা ফাইল চিত্র।

বড়দিনের ঠিক আগে খ্রিস্টান যাজকদের ক্ষোভের মুখে পড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

সর্বভারতীয় ক্যাথলিক বিশপ সংগঠনের সভাপতি কার্ডিনাল মার ব্যাসেলিওস ক্লিমিস অভিযোগ এনেছেন, ‘‘দেশে খ্রিস্টান তথা সংখ্যালঘুদের উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ, প্রশাসনের উপর তাঁদের বিশ্বাস ধাক্কা খাচ্ছে।’’ তাঁর মতে, আস্থা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব মোদী সরকারেরই।

ক্ষোভের কারণ, বিজেপি শাসিত রাজ্যে খ্রিস্টানদের উপর হিন্দু সংগঠনগুলির হামলা ও চোখরাঙানি। গত বৃহস্পতিবারই মধ্যপ্রদেশের সাতনায় ১০ জন যাজককে মারধর করা হয়েছে। অভিযোগের আঙুল বজরং দলের দিকে। থানার মধ্যেই পুলিশের সামনে যাজকদের মারধর করা হয়। তাঁদের গাড়িও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। বজরং দলের নেতাদের নির্দেশে পুলিশ উল্টে যাজকদের বিরুদ্ধেই হিন্দুদের জোর করে খ্রিস্টান বানানোর অভিযোগে এফআইআর করেছে বলে দাবি যাজকদের। একই ভাবে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের স্কুলগুলিকে বড়দিন পালন করার বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছে হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। ওই সংগঠনের নেতাদের দাবি, স্কুলে বড়দিন পালনের আসল উদ্দেশ্য হিন্দু শিশুদের খ্রিস্টান বানানো। দু’টি ঘটনাই ঘটেছে বিজেপি শাসিত রাজ্যে। কিন্তু কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই মুখ খোলেননি। পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে দায় সেরেছে রাজ্য প্রশাসন।

Advertisement

এই উদ্বেগ নিয়েই কার্ডিনাল ক্নিমিস আজ দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করেন। পরে দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে ক্লিমিস বলেন, ‘‘এই সব ঘটনায় খ্রিস্টানদের উদ্বেগ আরও বাড়ছে। গণতান্ত্রিক দেশে মানুষের স্বাধীনতা নিশ্চিত করুক সরকার। আশা করি, ধর্মীয় বিশ্বাসের ঊর্ধ্বে উঠে এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’’ রাজনাথ তাঁদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের দফতরে বিচার চেয়েও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ এনেছেন ক্লিমিস। তবে সরকারি সূত্রের বক্তব্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ব্যাপারে রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলছেন।

পোপ ফ্রান্সিসের ভারত সফর নিয়ে মোদী সরকার বিশেষ উৎসাহ দেখায়নি বলে খ্রীস্টানদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। নভেম্বরে পোপ বাংলাদেশ-মায়ানমার ঘুরে গেলেও ভারতে আসেননি। অথচ এ বারই তাঁর এ দেশে আসার সুযোগ ছিল। দেশের ২.৮০ কোটি রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা চান, পোপ ফ্রান্সিস ভারতে আসুন। কারণ শেষবার ১৯৯৯ সালে তৎকালীন পোপ দ্বিতীয় জন পল ভারতে এসেছিলেন। ক্যাথলিক বিশপদের ক্ষোভ, মোদী সরকার এ বার প্রথমে উৎসাহ দেখালেও পরে পিছিয়ে গিয়েছে। ক্লিমিস বলেন, ‘‘পোপকে আমন্ত্রণের প্রস্তাব দিয়ে আমরা সরকারকে দু’বার চিঠি দিয়েছি। এ থেকেই আমাদের মনের কথাটা বোঝা যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement