প্রতীকী চিত্র।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌভ্রাতৃত্বের নয়া নজির গড়ল জম্মু ও কাশ্মীরের ভাদেরওয়া গ্রাম। নির্বাচন ছাড়াই ঐকমত্যের ভিত্তিতে গ্রামের একমাত্র মুসলিম পরিবারের প্রধানকে পঞ্চায়েত সদস্য হিসেবে মনোনীত করলেন হিন্দু গ্রামবাসীরা। মুসলিম পরিবারটিকে নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি গোটা দেশকে বার্তা দেওয়ার জন্যও এই সিদ্ধান্ত, সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এমনটাই জানিয়েছেনতাঁরা।
গত ১৭ নভেম্বর থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে শুরু হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। মোট ন’দফা নির্বাচনের শেষ দফা আগামী ১১ ডিসেম্বর। কিন্তু নির্বাচন শেষ হওয়ার আগেই সারা দেশের নজর কেড়ে নিল ভাদেরওয়া গ্রাম পঞ্চায়েত। একটিমাত্র পরিবার ছাড়া গোটা গ্রামটাই হিন্দু। সেই গ্রামেই কোনও ভোট ছাড়া সবাই এক জোট হয়ে পঞ্চায়েত সদস্য হিসেবে মনোনীত করলেন চৌধুরী মহম্মদ হুসেনকে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ৪৫০ সদস্যের এই গ্রামের এক মাত্র মুসলিম পরিবারের প্রধান তিনিই। আর সেই কারণেই তাঁকে মনোনীত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
স্থানীয় গ্রামবাসী দুনিচাঁদ বলেন, ‘‘সারা দেশে আজ মেরুকরণ আর বিভাজনের রাজনীতি চলছে। সবাই তাই খুব অবাক হচ্ছে! কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা গর্বিত। আমরা একই পরিবারের অংশ হিসেবে নিজেদেরকে মনে করি।’’দু’টি কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। প্রথমত, দেশ জুড়ে বাড়তে থাকা হিংসার কারণে ভীত পরিবারটির পাশে থাকার বার্তা। দ্বিতীয়ত, সারা দেশের কাছে সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দেওয়া।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে রেলপথে জুড়ছে কলকাতা-শিলিগুড়ি
পড়শিদের এই সিদ্ধান্ত জানার পর থেকেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন ৫৪ বছরের মহম্মদ হুসেন। পশুপালনই তাঁর পেশা। গ্রামে স্ত্রী এবং পাঁচ ছেলের সঙ্গে তিনি থাকেন। চার মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন আগেই। গ্রামবাসীদেরসিদ্ধান্ত জানার পর তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি ভাগ্যবান, তাই এ রকম পড়শি পেয়েছি। এই গ্রামের ভালর জন্য আমি আমার জীবনও দিতে পারি। এই গ্রামের ভাল করাই এখন আমার একমাত্র লক্ষ্য।’’
আরও পড়ুন: ভারতে ভুয়ো খবর ছড়াতে বেশি তৎপর হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলিই, প্রকাশ রিপোর্টে
(ভোটের খবর, জোটের খবর, নোটের খবর, লুটের খবর- দেশে যা ঘটছে তার সেরা বাছাই পেতে নজর রাখুন আমাদের দেশ বিভাগে।)