অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকে চম্পই সোরেন। ছবি: সংগৃহীত।
বিজেপিতেই যোগ দিচ্ছেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চম্পই সোরেন। স্থির হয়ে গিয়েছে দিনক্ষণও। শুক্রবার (৩০ অগস্ট) রাঁচিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে পদ্মশিবিরে যোগ দেবেন তিনি। সোমবার রাতে এমনই দাবি করলেন বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা। সংবাদ সংস্থা এএনআই সোমবার গভীর রাতে একটি ভিডিয়োও প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে হিমন্ত এবং চম্পই একই গাড়িতে বসে আছেন। দাবি করা হচ্ছে সেটি অমিত শাহর বাসভবন থেকে বার হওয়ার সময়ের ভিডিয়ো।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বর্তমানে ঝাড়খণ্ডে বিজেপির নির্বাচনী কমিটির দায়িত্বেও রয়েছেন। সমাজমাধ্যমে সোমবার রাতে একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি। ছবিটিতে শাহর সঙ্গে একটি বৈঠকে দেখা যাচ্ছে চম্পইকে। রয়েছেন হিমন্তও। ছবিটি পোস্ট করে হিমন্ত লেখেন, “কিছুক্ষণ আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করেছেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আদিবাসী নেতা চম্পই সোরেন। ৩০ অগস্ট রাঁচিতে তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দেবেন।”
হেমন্ত সোরেন ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন প্রবীণ জেএমএম নেতা চম্পই। প্রায় মাস পাঁচেক জেলে ছিলেন হেমন্ত। তার পর ঝাড়খণ্ড হাই কোর্টের নির্দেশে জেলমুক্তি হয় তাঁর। জেল থেকে বেরিয়ে আবার ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসেন হেমন্ত। মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয় চম্পইকে। সেই থেকেই বিভিন্ন সময়ে অভিমানের সুর শোনা গিয়েছে প্রবীণ জেএমএম নেতার গলায়। ‘গভীর যন্ত্রণা’র কথা শুনিয়ে নিজেই সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন সম্ভব্য তিন অভিমুখের কথা— প্রথম, রাজনীতি থেকে অবসর। দ্বিতীয়, নিজের সংগঠন গঠন। তৃতীয়, নতুন সঙ্গী খোঁজা।
চম্পইয়ের রাজনৈতিক অভিমুখ কী হতে চলেছে, তা নিয়ে বিস্তর চর্চা চলেছে বিগত কয়েক দিনে। তবে তিনি খাতায় কলমে এখনও ঝাড়খণ্ডের মন্ত্রী ও জেএমএম বিধায়ক। এই আবহের মধ্যেই কিছু দিন আগে দিল্লিতে গিয়েছিলেন চম্পই। সঙ্গে ছিলেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার আরও ছয় বিধায়ক। চম্পই অবশ্য দাবি করেছিলেন, ‘ব্যক্তিগত’ কারণেই দিল্লি যাচ্ছেন। তবে সূত্রের খবর দিল্লি সফরে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি।
এরই মধ্যে সোমবার সকালে ঝাড়খণ্ডে বিজেপির নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা হিমন্ত বলেছিলেন, “আমি চাই চম্পই সোরেন বিজেপিতে যোগ দিয়ে আমাদের দলকে আরও শক্তিশালী করুন।” এর পর রাতেই হিমন্ত সমাজমাধ্যমে দাবি করলেন, বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন চম্পই।
সিংভূম তথা ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে ‘টাইগার’ নামেই অধিক পরিচিত চম্পই। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার দীর্ঘদিনের সৈনিক তিনি। হেমন্তের পিতা শিবু সোরেনকে নিজের ‘রাজনৈতিক গুরু’ বলে মানেন। চলতি বছরেই ঝাড়খণ্ডে ভোট রয়েছে। ঠিক তার আগে চম্পইকে বিজেপিতে টানতে পারলে পদ্মশিবিরকে তা ফায়দা দিতে পারে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। যদিও চম্পই বা তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।