বিক্রমাদিত্য সিংহ এবং বিদ্রোহী বিধায়কেরা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিজেপি শাসিত হরিয়ানার পঞ্চকুলায় গিয়ে বিদ্রোহী ছ’জন কংগ্রেস বিধায়কের সঙ্গে দেখা করলেন হিমাচল প্রদেশের ‘বিক্ষুব্ধ’ মন্ত্রী বিক্রমাদিত্য সিংহ। শিমলা থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে বরখাস্ত ওই বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওঁদের অনেকে ভুল বুঝতে পেরে কংগ্রেসে ফিরে আসতে চান। আমি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে-সহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব।’’
দলীয় হুইপ অমান্য করে বুধবার রাজ্য বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর সরকারের বাজেট প্রস্তাব সংক্রান্ত অর্থবিলের পক্ষে ভোট না-দেওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার ‘দলত্যাগ বিরোধী আইনে’ হিমাচল বিধানসভা স্পিকার কুলদীপ সিংহ পঠানিয়া ওই ছ’জন বিধায়কের পদ খারিজ করেছেন।
তার আগে মঙ্গলবার রাজ্যসভা ভোটের সময় ওই ছ’জন কংগ্রেস বিধায়ক— রবি ঠাকুর (লাহুল-স্পিতি), রাজেন্দ্র রানা (সুজনপুর), সুধীর শর্মা (ধরমশালা), ইন্দ্রদত্ত লক্ষণপাল (বারসার), চৈতন্য শর্মা (গগরেট), দেবেন্দ্র ভুট্টো (কুটলেহা) বিজেপির প্রার্থী হর্ষ মহাজনের সমর্থনে ‘ক্রস ভোটিং’ করেছিলেন। ফলে কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি হেরে যান। ৬৮ সদস্যের বিধানসভায় দু’পক্ষই ৩৪টি করে ভোট পাওয়ায় লটারির মাধ্যমে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়। ঘটনাচক্রে, ওই বিধায়কদের অধিকাংশই বিক্রমাদিত্য এবং তাঁর মা তথা হিমাচল কংগ্রেসের সভানেত্রী প্রতিভা সিংহের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত।
ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার ভোটপর্ব শুরুর আগেই প্রতিভা সরাসরি কংগ্রেস বিধায়ক দলে ভাঙনের কথা জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘বর্তমান সরকারের কার্যকলাপে কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশের ক্ষোভ রয়েছে। রাজ্যসভা ভোটে তার প্রভাব পড়তে পারে।’’ অন্য দিকে, বিক্রমাদিত্য বুধবার সকালে হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখুর সমালোচনা করে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। বুধের রাতে সেই ইস্তফা ফেরানোর কথা জানালেও বৃহস্পতির সকালেই আবার ‘বেসুরো’ হয়ে তিনি বলেন, ‘‘এখনও ইস্তফা ফেরাইনি।’’
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাতে এআইসিসির তিন পর্যবেক্ষকের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রতিভা ও বিক্রমাদিত্য জানিয়েছিলেন সমস্যা মিটে গিয়েছে। কিন্তু শুক্রবার দুপুরে কংগ্রেসের উপর চাপ বাড়িয়ে প্রতিভা বলেন, ‘‘আমাদের দলের চেয়ে বিজেপির কাজের পদ্ধতি ভাল!’’ সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি আরও অনেক কিছু করবে। আমাদের অবস্থান দুর্বল।’’ তাঁর এই মন্তব্যের জেরে হিমাচলে কংগ্রেস সরকারের সঙ্কট আপাতত কাটছে না বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন।