গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
কোনও মহিলা (স্ত্রী) উচ্চশিক্ষিত মানেই তিনি নিজের খরচ নিজে চালাতে পারবেন, এমন নয়। পরিবার আদালতের একটি রায়কে বাতিল করে এমনই মন্তব্য করল হিমাচলপ্রদেশ হাই কোর্ট। সংশ্লিষ্ট মামলার রায়দান যদিও এখনও স্থগিত রেখেছে আদালত।
স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অভিযোগ এনে পরিবার আদালতে মামলা করেছিলেন এক যুবক। শুরু হয় বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা। কিন্তু স্ত্রীকে খোরপোশ দিতে অস্বীকার করেন তিনি। তাঁর যুক্তি, যাঁকে বিয়ে করেছিলেন, তিনি উচ্চশিক্ষিত। তাই নিজের খরচ নিজে চালিয়ে নিতে পারবেন তিনি। আদালতও ব্যভিচারে দায়ে অভিযুক্ত স্ত্রীর খোরপোশের দাবি খারিজ করে দেয়। কিন্তু ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ কাকে হিমাচলপ্রদেশ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। সম্প্রতি ওই মামলার শুনানিতে হাই কোর্ট পরিবার আদালতের রায় খারিজ করে দিয়েছে। বিচারপতি সুশীল কুকরেজার পর্যবেক্ষণ, ‘‘কোনও মহিলা উচ্চশিক্ষিত মানেই তিনি নিজের খরচ নিজে করতে পারবেন এবং ভদ্রস্থ ভাবে থাকতে পারবেন, এটা ধরে নেওয়া ঠিক নয়। তাই পরিবার আদালতের এই পর্যবেক্ষণও ঠিক বলে মনে করছে না আদালত।’’ বিচারপতি আরও জানান, দেশের ভরণপোষণ সংক্রান্ত আইন হল একটি পরিবারের কল্যাণ-ভিত্তিক ব্যবস্থা। যেখানে কোনও পুরুষ তাঁর পরিবারের স্ত্রী, সন্তান এবং বাবা-মায়ের দেখভাল করতে সক্ষম না হলে তাঁদের ওই ব্যবস্থায় ছেড়ে দেওয়া যায় না।’’
পাশাপাশি, ব্যভিচারের যে অভিযোগ উঠেছে, সেটাও প্রমাণিত নয় বলে জানিয়েছে আদালত। দুই পক্ষের আইনজীবীর সওয়াল জবাবের পর আদালত জানতে পারে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট দেখে স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন যুবক। যার প্রেক্ষিতে আদালত বলে, ‘‘শুধু হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথন দেখে নির্ধারণ করা যায় না যে, স্ত্রী ব্যভিচারী।’’ এর পর আদালতের সামনে মামলাকারী মহিলার শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা তুলে ধরা হয়েছিল। জানানো হয়, তিনি কলা বিভাগে একটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। বিজ়নেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিষয়েও তাঁর ডিগ্রি আছে। তা ছাড়া, কম্পিউটার সায়েন্সেও সার্টিফিকেট কোর্স করেছেন। অন্য দিকে, ওই মহিলা আদালতে অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকেই তাঁর স্বামী দুর্ব্যবহার করতেন। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সন্দেহ করতেন।
সব পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর আদালত জানায়, ওই মহিলা ব্যভিচারী, সে নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আর স্ত্রী রোজগার করতে পারবেন বলে স্বামী যে দাবি করেছেন, তার স্বপক্ষে যুক্তি দেখাতে পারেননি।