ভোট উত্তাপের চাদরে গা মুড়েছে কনকনে হিমাচল

বিজেপি নিয়ে যেমন মানুষের মধ্যে ভাগাভাগি রয়েছে। কংগ্রেস নিয়েও একই অবস্থান। কংগ্রেসের ঝুলিতে যদি উন্নয়নের মেওয়া থেকে থাকে, তবে গুড়িয়া-কাণ্ড তাকে ক্ষমতায় যাওয়া আটকে দিতে পারে। নির্বাচনে সবুরের কোনও জায়গা নেই। সবুর করতেও চায় না হিমাচলবাসী।

Advertisement

উজ্জ্বল চক্রবর্তী

শিমলা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৭ ১০:১৩
Share:

শিমলায় নির্বাচনকে ঘিরে উত্তাপ পৌঁছে গিয়েছে প্রায় চল্লিশের ঘরে। —নিজস্ব চিত্র।

একই শহরে দু’রকম তাপমাত্রা। দুটোর মধ্যে ফারাক বেশ কয়েক গুণ। একটা যদি ১০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হয়, অন্যটা তা হলে চল্লিশ ছুঁইছুঁই!

Advertisement

আর ২৪ ঘণ্টাও বাকি নেই। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শুরু হয়ে যাবে হিমাচল প্রদেশের নির্বাচন গ্রহণ পর্ব। তার আগে রাজধানী শিমলায় নির্বাচনকে ঘিরে যে উত্তাপ, তা পৌঁছে গিয়েছে প্রায় চল্লিশের ঘরে। ঠিক একই সময় শিমলা শহরের তাপমাত্রা কিন্তু ১০ ডিগ্রির কাছাকাছি ঘোরাঘুরি করছে। রাতের দিকে তা নেমে দাঁড়াচ্ছে পাঁচে। শিমলা শহরের দেওয়ালে দেওয়ালে চোখ ঘোরালে কিন্তু এই উত্তাপের আঁচ পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ কোথাও কোনও পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যানার প্রায় কিছু নেই বললেই চললে। দেওয়াল লিখন তো অনেক দূরের কথা।

মঙ্গলবার প্রায় মধ্য রাতে কালকা পেরিয়ে হিমাচল ঢোকার মুখে চার জন নিরাপত্তারক্ষী নজরে পড়েছিল কালকা-হিমাচল হাইওয়েতে। কোনও রকম জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই প্রায় ২০ কিলোমিটার পাকদণ্ডি পেরিয়ে সোলানে এসে প্রথম দেখা গিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটিকে। বিশাল বড় ব্যানারে তাঁদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে রয়েছেন প্রেমকুমার ধুমল। সোলান থেকে ৪৫ কিলোমিটার পেরিয়ে শিমলা শহরে এসে ফের দেখা মিলেছিল মোদীজির।

Advertisement

তত ক্ষণে গোটা শহর ঘুমিয়ে পড়েছে। তাপমাত্রাও নেমে গিয়েছে সাতে। মধ্যরাতের শৈল শহরে তন্নতন্ন করে খুঁজেও পাওয়া যায়নি কোনও দেওয়াল লিখন। তাপমাত্রা নামতেই থেকেছে। ভোরের আলো শৈল শহরের গায়ে মাখামাখির শুরুর মুহূর্তেই তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। নির্বাচনের। শিমলার সব্জিমান্ডিতে বাড়তে থাকে ভিড়, চলতে থাকে আলোচনা, বিনিময় হতে থাকে উত্তাপও।

মধ্য বয়সী রামকুমার রানা সব্জিমান্ডিতে দাঁড়িয়েই বলছিলেন, ‘‘এ বারের মতো নির্বাচন হিমাচল প্রদেশ আগে দেখেনি। এক কথায় সেয়ানে সেয়ানে। এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে...। আইন-শৃঙ্খলা এ বারের নির্বাচনের বড় একটা ইস্যু। মানুষ কী ভাবছেন তা তাঁরা কালই বুঝিয়ে দেবেন।’’

রাহুল গাঁধী, সুশীলকুমার সিন্ধের সঙ্গে এক প্রচার সভায় বীরভদ্র সিংহ। ছবি: পিটিআই।

আরও পড়ুন: ক্ষমতায় এলেই জিএসটি বদল, ঘোষণা রাহুলের

ভাগাভাগি অতটা স্পষ্ট না হলেও জিএসটি নোটবন্দির বজ্র আঁটুনিতে বিজেপি যে বাঁধা পড়তে পারে সেটা যেমন বুঝিয়ে দিচ্ছেন হিমাচলবাসী, ঠিক তেমনই গুড়িয়া-কাণ্ড হয়ে উঠতে পারে কংগ্রেসের ফস্কা গেরো। একটা অংশের মতে, জিএসটি, নোটবন্দি করে বিজেপি আসলে সাধারণ মানুষের কোনও উপকারই করতে পারেনি। আবার অন্য একটা অংশ বলছে নতুন কিছু করতে গেলে সমালোচনা তো শুনতেই হবে। কিন্তু, ভালটা শেষেই অপেক্ষা করে।

বিজেপি নিয়ে যেমন মানুষের মধ্যে ভাগাভাগি রয়েছে। কংগ্রেস নিয়েও একই অবস্থান। কংগ্রেসের ঝুলিতে যদি উন্নয়নের মেওয়া থেকে থাকে, তবে গুড়িয়া-কাণ্ড তাকে ক্ষমতায় যাওয়া আটকে দিতে পারে। নির্বাচনে সবুরের কোনও জায়গা নেই। সবুর করতেও চায় না হিমাচলবাসী।

ঠান্ডা-ঠান্ডা, কুল-কুল আবহাওয়ায় হিমাচলবাসী আদতে মরুভূমির উত্তাপে প্রহর কাটাচ্ছে। হাতে আছে ২৪ ঘণ্টা। জয়ঘণ্টা বাজিয়ে শিমলার দরবারে কে আসছে? অপেক্ষায় মন নেই এই পাহাড়-রাজ্যের। তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। নির্বাচনের। প্রকৃতির নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement