হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু। — ফাইল চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের আগেই হিমাচল প্রদেশে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের কংগ্রেস সরকারকে ফেলে দিতে তৎপর বিজেপি। এই আবহেই মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর পদত্যাগের খবর চাউর হয়। যা নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য-রাজনীতি। এই খবর প্রকাশ্যে আসার ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই তা ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিল হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দফতর। এমনকি, মুখ্যমন্ত্রী নিজেও ‘পদত্যাগ’-এর জল্পনা নিয়ে মন্তব্য করেন, ‘‘আমি কোথাও ইস্তফা দিইনি।’’
মঙ্গলবার রাজ্যসভা আসনের ভোট-পর্বকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ডামাডোল শুরু হয় হিমাচলে। বিজেপি প্রার্থী হর্ষ মহাজনের কাছে হেরে যান কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। ৬৮ সদস্যের বিধানসভায় দু’পক্ষই ৩৪টি করে ভোট পাওয়ায় লটারির মাধ্যমে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয় হিমাচলে। সে রাজ্যের রাজ্যসভার একটি আসনে সরাসরি লড়াই ছিল কংগ্রেস এবং বিজেপির। ফলে ক্রস ভোটিংয়ের কারণে কংগ্রেস প্রার্থী হেরে গেলে সরাসরি প্রশ্ন উঠল সুখবিন্দর সিংহ সুখু সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে।
তার পর বুধবার সকালেই হিমাচলের কংগ্রেস সরকার ফেলতে আস্থাভোটের দাবি জানিয়ে রাজ্যপাল শিবপ্রতাপ শুক্লের কাছে দরবার করে বিজেপি। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে বেরোনোর পর বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুর বলেন, “জয়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ থাকা সত্ত্বেও আমাদের প্রার্থী হর্ষ মহাজন রাজ্যসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। নীতিগত ভাবে কংগ্রেসের এই রাজ্যে আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।”
এ হেন পরিস্থিতে আচমকাই মন্ত্রিত্ব ছাড়েন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত বীরভদ্র সিংহের ছেলে বিক্রমাদিত্য। তার পরেই সুখবিন্দরের পদত্যাগের জল্পনা ছড়ায়। তবে সেই জল্পনা নাকচ করে সুখু বলেন, ‘‘আমি পদত্যাগ করিনি। আমাকে কেউ বলেওনি। আমি শেষ দেখে ছাড়ব। আমি হাল ছাড়ব না। আমার মেয়াদ সম্পূর্ণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পদে থাকব।’’ শুধু তা-ই নয়, কংগ্রেসের মধ্যে যে বিদ্রোহের কথা শুরু হয়, তা-ও ‘ভুয়ো’ বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি পাল্টা দাবি করেন, বিজেপির কিছু বিধায়ক নাকি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
বিজেপির সরকার ফেলার উদ্যোগের কথা প্রকাশ্যে আসতেই কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ নামেন ‘ড্যামেজ’ কন্ট্রোলে। তিনি বলেন, ‘‘হিমাচলে সরকার বাঁচানোকেই আমরা এখন অগ্রাধিকার দিয়ে দেখব। কারণ সেখানকার মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখান করে আমাদের দলকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েছে।’’ এর পরই তিনি দাবি করেন, ‘‘রাজ্যসভায় ক্রস ভোটিং করে আমাদের সরকার ফেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। আমরা সব বিধায়কের সঙ্গে কথা বলছি। কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পিছপা হব না।’’