দেবেন্দ্র ফডণবীস। —ফাইল চিত্র
মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে শিবসেনার সঙ্গে শরিকি দ্বন্দ্ব অব্যাহত। এর মাঝেই সেনা শিবিরের উপর পাল্টা চাপ বাড়িয়ে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ার দাবি থেকে সরে এল বিজেপি।
রবিবার, রাজ্যের ‘কেয়ারটেকার মুখ্যমন্ত্রী’ দেবেন্দ্র ফডণবীসের বাড়িতে দু’দফায় বৈঠক বসে। কিন্তু সংখ্যা-সঙ্কট না কাটায় মরাঠা ভূমে সরকার গড়ার দাবি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয় গেরুয়া শিবির। রবিবার, বিজেপি নেতা চন্দ্রকান্ত পাটিল বলেন, দলের তরফে সরকার গড়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার কথা রাজ্যপালকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিজেদের দখলে রাখতে অনড় শিবসেনা। দলের নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘‘উদ্ধব ঠাকরে দলীয় বিধায়কদের বলেছেন, যে কোনও মূল্যে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিজেদের দখলে রাখবে শিবসেনা।’’ মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে কংগ্রেসও। দলের তরফে অশোক চহ্বাণ বলেন, ‘‘আমরা চাই না মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হোক।’’ স্থায়ী সরকার গঠনের পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি। মহারাষ্ট্র কংগ্রেস তার দলীয় বিধায়কদের জয়পুরের একটি রিসর্টে নিয়ে গিয়ে রেখেছে। এ দিন দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। তাঁদের সঙ্গে বৈঠকের পর খাড়গে বলেন, ‘‘আমরা প্রথম দিন থেকেই একই অবস্থানে রয়েছি। সেই অবস্থান আমরা রক্ষাও করে চলেছি। আমরা বিরোধী দলের আসনে বসব এবং জনমতকে সম্মান জানাব।’’ এখনও পর্যন্ত শিবসেনার সঙ্গে জোটে যেতে নারাজ এনসিপিও।
আরও পড়ুন: রাজ্যে বুলবুলের তাণ্ডবে মৃত ৬, সোমবার আকাশপথে ঘুরে দেখবেন মমতা
২৪ অক্টোবর ভোটের ফল ঘোষণার পর দু’সপ্তাহ কেটেছে। কিন্তু, এখনও জট কাটেনি মহারাষ্ট্রে। বরং, এ দিন বিজেপি সরকার গড়ার দৌড় থেকে সরে আসার পর সেই সঙ্কট আরও বাড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে। শনিবার নির্ধারিত সময় পেরনোর আগেই ‘কেয়ারটেকার মুখ্যমন্ত্রী’ দেবেন্দ্র ফডণবীসকে চিঠি লিখে সরকার গঠন প্রক্রিয়া শুরু করতে অনুরোধ জানান রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারি। কারণ, ভোটের ফলে মহারাষ্ট্রে বিজেপিই বৃহত্তম দল।
মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবি নিয়ে শরিক শিবসেনার সঙ্গে টালবাহানা চলছিল বিজেপির। কিন্তু, রাজ্যপালের সরকার গড়ার আহ্বান পাওয়ার পর তৎপর হয়ে ওঠে গেরুয়া শিবির। কিন্তু, রবিবার, দেবেন্দ্র ফডণবীসের বাড়িতে বৈঠকের পরেও সমাধান সূত্র বেরোয়নি। আর সেই আক্ষেপ বেরিয়ে এসেছে বিজেপি নেতা চন্দ্রকান্ত পাটিলের গলায়। ‘সেনা জনমতের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে’ বলে তোপ দেগেছেন তিনি। শিবসেনা, কংগ্রেস ও এনসিপির হাত ধরে সরকার গড়লে উদ্ধব ঠাকরের দলকে আগাম ‘শুভেচ্ছা’ও জানিয়ে রেখেছেন চন্দ্রকান্ত। মরাঠাভূমে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দখল নিতে মরিয়া শিবসেনাও। তাই তারা ৫০-৫০ ফরমুলার দাবি থেকে সরছে না।
ইতিমধ্যেই বিজেপির বিরুদ্ধে বিধায়ক কেনাবেচার চেষ্টা করার অভিযোগ তুলে দিয়েছে শিবসেনা। সঞ্জয় রাউত অভিযোগ করেন, ‘‘আমরা বিশ্বাস করি বিজেপি বিধায়ক কেনাবেচার চেষ্টা করবে। কিন্তু, তারা কংগ্রেস বিধায়কদের কখনই কিনতে পারবে না।’’
ঘর বাঁচাতে আপাতত সেনা বিধায়কদের মুম্বইয়ের মালাডে একটি রিসর্টে রেখে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে তাঁদের সঙ্গে ছিলেন অদিত্য ঠাকরেও। এ দিন রিসর্টে গিয়ে দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করেন দলের প্রধান উদ্ধব ঠাকরে।
আরও পড়ুন: টস জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠাল বাংলাদেশ
২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার ১৪৫। এ বারের নির্বাচনে ১০৫টি আসনে জয়লাভ করেছে বিজেপি। শিবসেনা পেয়েছে ৫৬টি আসন। এনসিপি ও কংগ্রেস পেয়েছে যথাক্রমে ৪৪ এবং ৫৪টি করে আসন।