এঁরা একেবারেই সাধারণ মানুষ। কেউ হয়তো সরকারি চাকুরে, কেউ নিতান্তই ছাপোষা ভদ্রলোক। কিন্তু হঠাৎ তাঁদেরই মুখ মোবাইলের-কম্পিউটারের পর্দায়, তাঁদের নিয়ে হাজারো আলোচনা, মুখরোচক গল্প, ব্যঙ্গ বিদ্রুপ, জনপ্রিয়তা। কারণ খুঁজতে গেলে দেখা যাবে তার পিছনে যুক্তি নেই কোনও। এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক তেমনই কয়েকজন মানুষকে, যাঁরা জনপ্রিয় হয়েছিলেন নিতান্তই ভুল করে।
কায়নাত আরোরা: মাত্র দিন কয়েক আগে তাঁর ছবি নিয়ে তোলপাড় হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। একেরপর এক কমেন্ট আর লাইকের বন্যা। কিন্তু হঠাৎ কায়নাতকে নিয়ে এত মাতামাতির কারণ কী? কারণ তিনি সুন্দরী, তন্বী। পাশাপাশি তিনি নাকি পঞ্জাব পুলিশের অফিসারও। ব্যাস এখান থেকেই হৈচৈ-এর সূত্রপাত। কেউ পুলিশ অফিসারের প্রেমে পড়ছেন, তো কেউ তাঁর হাতে গ্রেফতার হতে চেয়ে ফলাও করে তা ঘোষণাও করেছেন। কায়নাত আসলে এক জন অভিনেত্রী। ‘গ্রেট গ্র্যান্ড মস্তি’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। অভিনয় বা পেশায় সাফল্যের জন্য নয়, কায়নাত ভাইরাল হলেন সম্পূর্ণ অন্য একটি কারণে।
ইনি একজন মধ্যবিত্ত ভদ্রলোক। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার মতো তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য ঘটনাও ঘটাননি তিনি। ভারতের কোনও এক পেট্রোল পাম্পে দাঁড়িয়ে নিজের কাজটি মন দিয়ে করছিলেন তিনি। হঠাৎই কোনও এক গ্রাহক ওই ভদ্রলোকের সঙ্গে নবাব পুত্তুরের মুখের আশ্চর্যরকম মিল পান। সঙ্গে সঙ্গে একটি ছবি তোলা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় তা আপলোড করার কাজটিও সম্পূর্ণ করেন। ভাইরাল হওয়া আটকায় কে?
আচমকা দেখে মনে হবে, দেশের প্রধানমন্ত্রী অতি সাধারণ একটি পোশাকে রেল স্টেশনে দাঁড়িয়ে মোবাইলে চোখ সেঁটে কিছু করছেন। ভাল করে দেখুন, বুঝতে পারবেন— আসলে উনি নরেন্দ্র মোদী নন। তাঁর মতো দেখতে অন্য কোনও ব্যাক্তি। কিন্তু নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হওয়ার জন্য তাঁর ওই লুকস টুকুই যথেষ্ট।
একজন আমাদের ঘরের মেয়ে দীপিকার সঙ্গে চুটিয়ে অভিনয় করে এতদিনে আমাদের কাছে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন। অন্যজন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ বিজেপি নেতা হিসাবে দেশে যথেষ্ট পরিচিত। প্রথমজন ভিন ডিজেল, অন্যজন যোগী আদিত্যনাথ। কিন্তু ভাবতে পারেন, নিজেদের সুবিস্তৃত কর্ম ইতিহাসের বাইরেও শুধুমাত্র দেখতে এক রকম বলে এঁরা দুজন এক সময় ভাইরাল হয়েছিলেন।
একজন জন্মের পর থেকেই বিখ্যাত। আর কয়েকদিনের মধ্যেই হয়তো দেশের অন্যতম গুরুত্বরূর্ণ দলের দায়িত্বভার নিজের কাঁধে নিতে চলেছেন জুনিয়র গাঁধী। অপরজন কিন্তু মোটেও তেমন পরিচিত ছিলেন না। তবে হ্যাঁ, ভাইরাল হওয়ার সুবাদে এখন সুরাতের একটি রেস্তোরাঁর মালিক প্রশান্ত শেঠিকে অনেকেই চেনেন। কারণ তিনি রাহুল গাঁধীর মতো দেখতে।
সাদা শার্ট আর চেক লুঙ্গি, কাঁধে চেককাটা গামছা। চোখে আবার প্রায় একই রকম সানগ্লাস। রাস্তা-ঘাঠে হঠাৎ তাঁকে দেখলে শিবসেনা প্রধান বাল কেশব ঠাকরের যমজ ভাই বলে ভুল হতেই পারে। আর শুধুমাত্র এই কারণেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিখ্যাত হয়েছিলেন নাম না জানা ওই ভদ্রলোক।