বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত তামিলনাড়ু। চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই।
ঘূর্ণিঝড় ‘ফেনজল’ দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে আগেই। কিন্তু সেই গভীর নিম্নচাপের জেরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরি। তামিলনাড়ুতে এই দুর্যোগে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। সোমবার সন্ধ্যায় তিরুভান্নামালাইয়ে বৃষ্টির জেরে ধস নামায় পাহাড় থেকে পাথর গড়িয়ে একটি বাড়ির উপর পড়ে। গুঁড়িয়ে যায় বাড়িটি। ঘটনায় পাঁচ শিশু-সহ এক পরিবারের সাত জন আটকে পড়েন। মঙ্গলবার সকালে চার জনের দেহ উদ্ধার হয়। বাকি দেহ উদ্ধারের কাজ চলছে।
বৃষ্টিতে জলমগ্ন তামিলনাড়ুর বিস্তীর্ণ অঞ্চল। নদীগুলি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। গ্রামের পর গ্রাম জলের তলায়। তবে বৃষ্টি এখনই থামার কোনও লক্ষণ নেই বলে মৌসম ভবনের বার্তা। ইতিমধ্যেই ১৫টি জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জলমগ্ন এলাকাগুলিতে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে সেনা, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী-সহ বিভিন্ন উদ্ধারকারী দল। সূত্রের খবর, তামিলনাড়ুর দুর্যোগ পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সমস্ত রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে সোমবারই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন। কেন্দ্রের কাছে ২০০০ কোটি টাকা সাহায্যও চেয়েছেন তিনি। সোমবারের সেই চিঠি পাওয়ার পরই মঙ্গলবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিনের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। মৌসম ভবন জানিয়েছে, মঙ্গলবার বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে তামিলনাড়ুর ১৫ জেলায়। তার মধ্যে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে নীলগিরি অঞ্চল, কৃষ্ণগিরি, তিরুপুর, ইরোদ, থেনি এবং মাদুরাইয়ে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সে রাজ্যের ধর্মপুরী, কৃষ্ণগিরি, রানিপেট, ভেলোর, তিরুপাথুরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ৬৯ লক্ষ পরিবার এবং দেড় কোটি রাজ্যবাসী এই দুর্যোগে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এক দিনে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ভিলুপ্পুরম, তিরুভান্নামালাই এবং কল্লাকুরিচি জেলায়। ফলে এই জেলাগুলির বিস্তীর্ণ অঞ্চল এখন জলের নীচে। শুধু তামিলনাড়ু নয়, পুদুচেরিতেও অবস্থা ভয়াবহ। সেখানেও তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। পুদুচেরির বহু এলাকায় প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্ধ রয়েছে স্কুল, কলেজ।