—প্রতীকী ছবি।
দেশে করোনাভাইরাসের নতুন জেএন.১ ভেরিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়লেও এখনই চিন্তার কিছু নেই বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া। সূত্রের মতে, এখনই বুস্টার ডোজ় নেওয়ার পরিস্থিতি নেই বলেও দাবি করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তবে গত ৬ ডিসেম্বর দেশে যেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১১৫ ছিল, তা বর্তমানে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৬১৪-তে। গত সাত মাসের মধ্যে দৈনিক সংক্রমণের এই সংখ্যাই সর্বোচ্চ।
বছরের শেষে করোনাভাইরাসের জেএন.১ শাখাটি নতুন করে সংক্রমণের আশঙ্কা ছড়াতে শুরু করেছে বিশ্ব জুড়েই। এ দেশেও বাড়ছে সংক্রমিতের সংখ্যা। গত দু’দিনে জিনোম সিকোয়েন্স করে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ২১ জনের নমুনায় জেএন.১-এর অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। এঁদের মধ্যে ১৯ জনই গোয়ার। মহারাষ্ট্র ও কেরলে এক জন করে আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। গোয়ায় বছরের শেষে বিদেশি পর্যটকদের ভিড় বাড়ে। মূলত বিদেশিদের আগাগোনার ফলেই ওই রাজ্যে এত বেশি সংখ্যক জেএন.১ আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলেই মনে করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তবে কেরল, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড এবং কর্নাটকেও আক্রান্তের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।
বর্তমানে ওই জেএন.১-কে ভেরিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট (ভিওআই) বলে চিহ্নিত করে নজর রাখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। স্বাস্থ্য কর্তাদের বক্তব্য, যত ক্ষণ না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সেটিকে উদ্বেগজনক বা ভেরিয়েন্ট অব কনসার্ন (ভিওসি) বলে ঘোষণা করছে, তত ক্ষণ চিন্তার তেমন কোনও কারণ নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই ভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষমতা বেশি বলে মারণক্ষমতা কম। ফলে আক্রান্তদের কো-মর্বিডিটি না থাকলে দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব সুধাংশ পন্থের দাবি, আক্রান্তদের মধ্যে ৯২.৮ শতাংশই ঘরোয়া চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।
পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আজ মন্ত্রকের কর্তাদের নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মনসুখ। সেখানে তিনি প্রতিটি রাজ্যকে সংক্রমণ হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনাটিকে মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলেন। করোনা থাকুক বা না থাকুক, রাজ্যের হাসপাতালগুলি কতটা তৈরি, তা খতিয়ে দেখতে প্রতি তিন মাস অন্তর মক ড্রিল করার পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। পরীক্ষা বাড়ানো এবং বেশি সংখ্যক নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সে পাঠানোর উপরেও জোর দিয়েছেন তিনি। পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এখনই ভয় পাওয়ার মতো কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ভাইরাসের ওই শাখাটি নতুন। তাই সেটিকে নিয়ে পরীক্ষা জারি রয়েছে। ভারতে এখনও ওই শাখা আক্রান্তদের কোনও ক্লাস্টার তৈরি করেছে, এমন কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশের শরীরে মৃদু উপসর্গ দেখা গিয়েছে এবং কোনও জটিলতা ছাড়াই তাঁরা সুস্থ হয়ে গিয়েছেন।’’
দেশের ৯২ শতাংশ মানুষ করোনার প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু বুস্টার ডোজ় নেওয়ার প্রশ্নে প্রবল অনীহা দেখিয়েছেন অধিকাংশ ভারতবাসী। নতুন করে যখন সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তখন আবার বুস্টার ডোজ় নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। সূত্রের খবর, আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, এখনই নতুন করে বুস্টার ডোজ় নেওয়ার প্রয়োজন নেই।