ছবি: সংগৃহীত।
রিলায়্যান্সের মোবাইল টাওয়ারে হামলার ঘটনায় পঞ্জাব সরকার এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে নোটিস দিল পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট। পঞ্জাবে রিলায়্যান্সের মোবাইল টাওয়ারে হামলার পর সোমবার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল মুকেশ অম্বানীর সংস্থা রিলায়্যান্স জিয়ো ইনফোকম লিমিটেড। ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে পঞ্জাব সরকারের পদক্ষেপের জন্য আবেদন করেছিল তারা। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশ, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারিতে এই মামলার পরবর্তী শুনানিতে নোটিসের জবাব দিতে হবে।
কৃষি আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশ জুড়ে রিলায়্যান্সের পণ্য ও পরিষেবা বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন কৃষকেরা। তাঁদের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদী সরকারের জারি করা তিনটি নতুন কৃষি আইনে লাভবান হবেন অম্বানী-আদানিদের মতো বড় সংস্থাগুলি। এমনকি কৃষকদের বদলে অম্বানী-আদানিদেরই স্বার্থরক্ষায় এই আইনগুলি প্রণয়ন করা হয়েছে। দিল্লির সীমানায় আন্দোলনের পাশাপাশি রিলায়্যান্সের যাবতীয় পণ্য বয়কটেরও ডাক দিয়েছেন কৃষকেরা। এই আবহে রিলায়্যান্সের সুপারমার্কেট বা পেট্রল পাম্পে অবরোধের ঘটনাও ঘটে। অম্বানীর রিলায়্যান্সের ইন্ডাস্ট্রিজের অধীনস্থ সংস্থা রিলায়্যান্স জিয়ো ইনফোকমের পরিষেবারও বয়কটে ডাক দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে পঞ্জাবে রিলায়্যান্সের মোবাইল টাওয়ার ভাঙুচর করা হয়।
রিলায়্যান্সের দাবি, কৃষি আন্দোলনের নামে তাদের ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বীরাই কায়েমি স্বার্থরক্ষায় সংস্থার পরিকাঠামোয় হামলা চালাচ্ছে। এমনকি, তাদের কর্মীদেরও হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। যার ফলে জিয়ো-র কেন্দ্রগুলিও বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে সংস্থা। সেই সঙ্গে সংস্থার প্রতিদ্বন্দ্বিরাই ভুয়ো গুজব ছড়াচ্ছে যে নতুন কৃষি আইনের ফলে তাদের ফায়দা হবে।
আরও পড়ুন: উইপোকাদের তাড়ান, লক্ষ্মীর পাশে দাঁড়িয়ে দলকে বৈশালী
আরও পড়ুন: অনাবাসীদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানে সায় দিল বিদেশ মন্ত্রক
এই ধরনের হামলার ঘটনা বন্ধে পঞ্জাব সরকারের পদক্ষেপের আবেদন করে আদালতে যায় রিলায়্যান্স। সোমবার আদালতের কাছে আবেদনে পঞ্জাব সরকারের মুখ্যসচিব, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং টেলিকম দফতরের কাছেও জবাব তলব করেছে রিলায়্যান্স।
মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে পঞ্জাব সরকারের তরফে রাজ্যেক অ্যাডভোকেট জেনারেল অতুল নন্দা আদালতকে জানিয়েছেন, রিলায়্য়ান্সের মোবাইল টাওয়ারের সুরক্ষায় ইতিমধ্যে রাজ্যে ১,০১৯টি পেট্রোল পার্টি-সহ ২২ জন নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। সুরক্ষার পাশাপাশি মোবাইল টাওয়ারে হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখবেন তাঁরা।
কৃষকদের অভিযোগ, অম্বানী-আদানিদের মতো কর্পোরেট সংস্থাগুলি চুক্তিভিত্তিক চাষ করিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ফসল কিনবে। পাশাপাশি, নিজেদের ইচ্ছে মতো ওই ফসল মজুত করে দাম বাড়লে তা বাজারে ছাড়বে। কারণ, নতুন কৃষি আইনে যত খুশি শষ্য মজুতের কথা বলা হয়েছে। তবে কৃষকদের
অভিযোগ অস্বীকার করে রিলায়্যান্সের দাবি, নতুন কৃষি আইনের ফলে তাদের লাভবান হওয়ার প্রশ্নই নেই। কারণ, চুক্তিভিত্তিক কৃষিকাজে বা কর্পোরেট ফার্মিংয়ের ব্যবসায় পা রাখার কোনও পরিকল্পনা নেই রিলায়্যান্সের। এমনকি, কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ফসল কেনারও প্রশ্ন নেই। সরবরাহকারীদের কাছ থেকেই ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে (এমএসপি) তা কেনা হবে।