—ফাইল চিত্র।
চাপের মুখে নতিস্বীকার করে হাথরস-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। হাথরসে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করা নিয়ে দিন ভর রাজনৈতিক টানাপড়েন চলেছে। দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমানায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও বাধে কংগ্রেসের। যার পর রাহুল গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা এবং তিন কংগ্রেস সাংসদকে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে অনুমতি দিতে বাধ্য হয় উত্তরপ্রদেশ সরকার। শনিবার রাতে তাঁরা নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে আসার ঠিক পরেই সিবিআই তদন্তের ঘোষণা হয়।
এ দিন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের টুইটার হ্যান্ডলে লেখা হয়, ‘‘ গোটা হাথরস-কাণ্ড খতিয়ে দেখতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।’’
এর পরে, নিজের টুইটার হ্যান্ডলে যোগী আদিত্যনাথ লেখেন, ‘‘হাথরসের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার সমস্ত বিন্দুগুলিকে সাজিয়ে যাতে আকার দেওয়া যায়, তার জন্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিবিআই)-এর হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়ার সুপারিশ করছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সকল দোষীকে কঠোরতম শাস্তি দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমরা।’
মুখ্যমন্ত্রীর দফতর ও আদিত্যনাথের টুইট।
আরও পড়ুন: হাথরসে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন রাহুল-প্রিয়ঙ্কা
তবে সিবিআই তদন্তের নির্দেশে তাঁরা খুশি নন বলে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন নির্যাতিতার পরিবার। গোটা ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত চান বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
হাথরস-কাণ্ডে শুরু থেকেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব নির্যাতিতার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনরা। পুলিশ ও প্রশাসন অভিযুক্তদের আড়াল করছে বলে অভিযোগ তাঁদের। নির্যাতিতার জন্য ন্যায় বিচারের দাবিতে সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তা নিয়ে সরকার বিরোধী প্রতিবাদ মিছিল এবং বিক্ষোভ চলছেই। গতকাল গাঁধী জয়ন্তীতে দিল্লির যন্তর মন্তরেও বিক্ষোভে শামিল হন হাজার হাজার মানুষ। সেখানে অভিযুক্তদের ফাঁসিতে ঝোলানোর দাবি ওঠে।
আরও পড়ুন: ডেটলাইন হাথরস: ১৮ দিন, ১৮ ঝলক
তবে বিরোধীদের দাবি-দাওয়াকে এত দিন বিশেষ আমল দিচ্ছিল না যোগী আদিত্যনাথের সরকার। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখাও করতে দেওয়া হচ্ছিল না কাউকে। বৃহস্পতিবার হাথরস যাওয়ার পথে রাহুল গাঁধী ও কংগ্রেস নেতৃত্বকে বাধা দেয় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। গাড়িতে তুলে তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে আনা হয়। এমনকি ধাক্কা মেরে পুলিশ রাহুল গাঁধীকে ফেলেও দেয়। শুক্রবার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গেও একই আচরণ করে পুলিশ।
তাতে দমে না গিয়ে এ দিন ফের দিল্লি থেকে হাথরসের উদ্দেশে রওনা দেন রাহুল, প্রিয়ঙ্কা, কংগ্রেসের ৩০ জন সাংসদ এবং সমর্থকরা। দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমানায় ফের তাঁদের রাস্তা আটকায় পুলিশ। লাঠিচার্জও করা হয়। কিন্তু কংগ্রেস নেতাদের বিক্ষোভের সামনে শেষমেশ মাথা নত করতে হয় যোগী সরকারকে। রাহুল, প্রিয়ঙ্কা-সহ ৫ কংগ্রেস নেতাকে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়।