ছবি: সংগৃহীত।
গাঁধী-স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, মহাত্মা গাঁধী ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর কল্পনা করেছিলেন। যেখানে দেশের সব গ্রাম স্বনির্ভর হয়ে উঠবে। গাঁধীজয়ন্তীতে স্পষ্ট ছিল প্রধানমন্ত্রীর বার্তা— তিনিই গাঁধীর উত্তরসূরি হিসেবে তাঁর স্বপ্নপূরণ করছেন।
সনিয়া গাঁধী এর কিছু ক্ষণ পরেই পাল্টা তির ছুড়লেন। বললেন, ‘‘আজ কিছু লোক গলা তুলে গাঁধীজির নাম করেন। কিন্তু নিজেদের কাজকর্মের মাধ্যমে তাঁরা গাঁধীজির মূল্যবোধ ও আদর্শকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন।’’ বিহারের ভোটারদের জন্য কংগ্রেসের ভার্চুয়াল ‘গাঁধী চেতনা র্যালি’-তে মোদীকে নিশানা করে কংগ্রেস সভানেত্রী বলেন, ‘‘অনেক হয়েছে। আমি শুধু এটুকুই বলতে চাই যে, কিছু লোক আবেগ, বিভ্রান্তি ও ভয়ের কারবার করে সরকার চালাচ্ছে। আপনারা তাঁদের থেকে সাবধান থাকুন। ঠিক সিদ্ধান্তটি নিন।’’
গাঁধীজয়ন্তীতে আজ মোদীকে নিশানা করেই বিহার ভোটের প্রচার শুরু করলেন সনিয়া। কংগ্রেস সূত্রের খবর, আরজেডি-র সঙ্গে কংগ্রেস ও বাম দলগুলির জোটও প্রায় পাকা। জোটের সূত্র অনুযায়ী, বিহারের ২৪৩টি আসনের মধ্যে লালুপ্রসাদ-তেজস্বী যাদবের আরজেডি ১৪৪টি আসনে লড়বে। কংগ্রেস লড়বে ৭০টিতে। সিপিএম, সিপিআই ও সিপিআই(এম-এল) ২৯টি আসনে লড়তে পারে।
আরও পড়ুন: দাহের ৪৮ ঘণ্টা পরেও নিভে যাওয়া চিতায় পড়ে রয়েছে নির্যাতিতার অস্থি
কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, কৃষি আইনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ এবং লকডাউনের পরে পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা— এই দুইয়েরই প্রভাব পড়বে বিহার ভোটের ফলে। লাভ পাবে কংগ্রেস। সনিয়া আজ তাই ইউপিএ সরকারের চালু করা ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পই যে বিহারের মতো রাজ্যে গ্রামে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের ভরসা হয়ে উঠেছিল, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে কংগ্রেস কৃষি আইনের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনে চালাবে বলেও বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।
রাহুল গাঁধী পঞ্জাব-হরিয়ানায় রবিবার থেকে ট্র্যাক্টর মিছিলে যোগ দেবেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, অন্যান্য রাজ্যের নেতারাও তাঁকে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। মোদী সরকার কৃষি ক্ষেত্রের সংস্কারের ফলে চাষিদের উপকার হবে বলে দাবি করলেও সনিয়া মনে করিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি ক্ষমতায় এসেই জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে চাষিদের ক্ষতিপূরণের শর্ত লঘু করতে চেয়েছিল। অধ্যাদেশও এনেছিল। কিন্তু সংসদে আইন পাশ করাতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রী মোদী আজ মোহনদাস গাঁধীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, তিনি দেশকে সত্য, অহিংসা ও সত্যাগ্রহর পথ দেখিয়েছেন। আর সনিয়া বিহারের ভোটারদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘আপনারা নিজেরাই দেখুন, চার দিকে অরাজকতা, অত্যাচার, পরিকল্পনা করে সমাজে ভেদাভেদের আবহ তৈরি করা হচ্ছে। নির্দোষদের উপর চলছে অত্যাচার।’’