শিবদর্শনের বাড়ি গরমেও থাকে ঠান্ডা।
গরমের দিনে এসি ছাড়াই ঠান্ডা থাকতে গোমাতার উপরেই ভরসা রেখেছেন পেশায় অধ্যাপক শিবদর্শন মালিক। গোবর, মাটি, নিম গাছের ছাল, পাতা দিয়ে তৈরি করেছেন ‘বৈদিক’ প্লাস্টার। সেটাই ব্যবহার করেছেন বাড়ি তৈরি করতে। আর তাতেই নাকি স্বাভাবিকের তুলনায় সাত ডিগ্রি কম তাপমাত্রা তাঁর ঘরের।
হরিয়ানার শিবদর্শন বরাবরই কংক্রিটের বিরুদ্ধে। রোহতক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করার পরে যোগ দেন সোনিপতের মুরথাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। যদিও অধ্যাপকের চাকরি বেশি দিন করেননি। অধ্যাপনায় তৃপ্তি না মেলায় ১৯৭৭ সালে চাকরি ছেড়ে আইআইটি দিল্লি, বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ শুরু করেন। কাজের বিষয় ছিল পরিবেশ রক্ষা। সেই সময়েই তিনি ‘বৈদিক’ প্লাস্টার তৈরির কাজ শুরু করেন। শিবদর্শন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘গ্রামে মানুষ দেওয়ালে গোবর লেপে রাখেন। এটা পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে কাজ করে। যদিও আজকাল গ্রামের বাসিন্দারাও গোবরের উপরে নির্ভরতা কমাচ্ছেন। কিন্তু পুরনো পদ্ধতি অনেক ভাল। গোবর যেমন গ্রীষ্মকালে ঘর ঠান্ডা রাখে তেমনই শীতকালেও আরাম দেয়।’’
২০০৬ সালে ‘বৈদিক’ প্লাস্টার তৈরি করেন শিবদর্শন। তাঁর দাবি, এটি সাধারণ প্লাস্টারের মতোই বাড়ির দেওয়ালকে মসৃণ ও সুন্দর করে। তিনি কী কী ব্যবহার করেছেন এই প্লাস্টার তৈরি করতে? শিবদর্শন জানিয়েছেন, এর মধ্যে মূল উপাদান হিসেবে থাকে গোবর, মাটি, কাদা, নিমপাতা। এ ছাড়াও জিপসাম, ক্লাস্টার বিনস, চুনাপাথর-সহ কিছু পরিবেশবান্ধব উপকরণ রয়েছে। শিবদর্শন জানিয়েছেন, কংক্রিটের বাড়িতেও এই প্লাস্টার ব্যবহার করা যায়। ইতিমধ্যেই দেশের ২০ হাজার বাড়িতে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে বলেও দাবি তাঁর। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এই প্লাস্টার ব্যবহারে বাড়ি যে হেতু ঠান্ডা থাকে তাই বিদ্যুৎ খরচেও অনেকটা সাশ্রয় হয়।