দলীয় নেতানেত্রীদের সঙ্গে সংসদ থেকে বেরোচ্ছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। পিটিআই
সংসদের অধিবেশন শেষ হতে না হতেই কংগ্রেসের মধ্যে অন্তর্কলহ শুরু হয়ে গেল। ভোটমুখী রাজ্য উত্তরাখণ্ডের প্রবীণ নেতা হরিশ রাওয়ত আজ কংগ্রেস হাই কমান্ডের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
রাওয়ত এত দিন ভোটমুখী রাজ্য পঞ্জাবে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলাচ্ছিলেন। সেই দায়িত্ব থেকে রেহাই পেয়ে উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাওয়ত নিজের রাজ্যে মন দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, ‘‘যে ভোট-সমুদ্রে সাঁতার কাটতে হবে, শীর্ষ নেতৃত্ব সেখানে অনেক কুমির ছেড়ে রেখেছে।’’ গাঁধী পরিবার ও তার আস্থাভাজনদের
দিকে ইঙ্গিত করে রাওয়তের মন্তব্য, ‘‘যাঁদের নির্দেশে সাঁতার কাটতে হবে, তাঁদের চ্যালাচামুণ্ডারা আমার হাত-পা বেঁধে ফেলছে।’’
সংসদের অধিবেশনের শেষে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী আজ সংসদ ভবনেই চারটি রাজ্যের সাংসদদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেছিলেন। তামিলনাড়ু, কেরল ও অসম-মেঘালয়ের সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে তাঁর পরামর্শ ছিল, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি, লখিমপুর খেরিতে কৃষক-হত্যা, ভোটার কার্ড-আধার সংযুক্তির মতো জাতীয় বিষয় নিয়ে সাংসদদের নিজের কেন্দ্রে মানুষের দরজায় পৌঁছে যেতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভা সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যও সনিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। প্রদীপ সনিয়াকে জানান, বিধানসভা বা কলকাতা পুরসভায় খারাপ ফল হলেও কংগ্রেসের সদস্যপদ অভিযানে যথেষ্ট উৎসাহ দেখা যাচ্ছে।
কিন্তু এ সবের পরেই রাওয়তের ক্ষোভ কংগ্রেসের মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরি করে। রাহুল গাঁধী গত সপ্তাহেই দেহরাদূনে গিয়ে জনসভা করেছেন। দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন তিনি। তার পরে কংগ্রেসের নেতাদের দাবি ছিল, উত্তরাখণ্ডে কংগ্রেস বিজেপিকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসবে। এরই মধ্যে রাওয়তের ক্ষোভ প্রকাশ নিয়ে কংগ্রেস সূত্রের ব্যাখ্যা, আসলে রাওয়ত চাইছেন তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করা এবং তাঁর পরিবারের লোকেদের প্রার্থী করা হোক। তাঁর হাতেই টিকিট বণ্টন ছেড়ে দেওয়া হোক। কংগ্রেসের একটি সূত্রের দাবি, দেহরাদূনে বৈঠকে রাহুল বার্তা দিয়েছেন, রাওয়তের এ সব দাবি মানা হবে না। তার পরেই তিনি চটেছেন।
রাওয়ত উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজ্যের নির্বাচনে নেতৃত্ব দিতে চাইছিলেন। সে কারণেই তিনি বার বার পঞ্জাবের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি চাইছিলেন। কিন্তু তিনি আজ অভিযোগ তুলেছেন, অধিকাংশ জায়গায়ই দলের সংগঠন তাঁকে সাহায্যের বদলে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে অথবা নেতিবাচক ভূমিকা নিচ্ছে। এর পিছনে গাঁধী পরিবারের আস্থাভাজনদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাওয়ত বলেন, ‘‘বার বার মনে হয়েছে, অনেক হয়েছে, এ বার বিশ্রামের সময়।’’ রাহুল গাঁধীর শিবিরের পাল্টা দাবি, রাওয়তের সুপারিশেই উত্তরাখণ্ডের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে বদল হয়েছে। তার পরেও তিনি বলছেন, সংগঠনের সাহায্য পাচ্ছেন না!