বিশ্ব বাজারে ছুটছে অশোধিত তেলের দর। পাঁচ রাজ্যে ভোট মিটলে ভারতেও পেট্রল-ডিজ়েলের দাম বাড়বে বলে আশঙ্কা ছিল। এখনও পর্যন্ত তা না-হলেও যে কোনও দিনই দর বাড়তে পারে বলে চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না মানুষ। এরই মধ্যে সোমবার সংসদে তেলমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীর দাবি, বহু দেশে তেলের দাম অতিমারিতে ৫০ শতাংশের বেশি বাড়লেও, ভারতে হয় তা হয় স্থিতিশীল ছিল বা মাত্র ৫% বেড়েছে। অথচ এ জন্য আনন্দ করার বদলে, কেন দাম বাড়ল সেই প্রশ্ন শুনতে হচ্ছে সরকারকে। তবে আমজনতাকে আগামী দিনে তেলের চড়া দরের থেকে স্বস্তি দিতে কেন্দ্র সব রকম পদক্ষেপ নেবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সেই সঙ্গে আজ নাম না-করে কংগ্রেস রাহুল গান্ধীকে তোপ দেগে পুরী বলেন, ‘‘গত ৫ মার্চ ভোটের পরে পেট্রলের দাম বাড়বে বলে এক রাজনৈতিক নেতার করা বক্তব্যের জেরে বিক্রি বেড়ে গিয়েছিল ২০%। এ ভাবে কোনও মন্তব্যের কারণে মজুতদারি ২০% বৃদ্ধি পাওয়া দুর্ভাগ্যজনক।’’ সে দিন রাহুল টুইটে বলেছিলেন, ‘‘দ্রুত পেট্রলের ট্যাঙ্ক ভর্তি করে নিন, মোদী সরকারের ‘ভোট-অফার’ শেষ হওয়ার মুখে।’’
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৪ মার্চ লকডাউনের আগের দিন কলকাতায় লিটারে পেট্রল ও ডিজ়েলের দাম ছিল যথাক্রমে ৭২.২৯ টাকা এবং ৬৪.৬২ টাকা। এখন তা যথাক্রমে ১০৪.৬৭ টাকা এবং ৮৯.৭৯ টাকা। অন্য দিকে, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের জেরে সম্প্রতি অশোধিত তেল (ব্রেন্ট ক্রুড) দর ব্যারেলে পৌঁছেছিল ১৩৯ ডলারে। সোমবার তা রয়েছে ১০৫ ডলারের আশেপাশে।
অশোধিত তেলের দর ব্যারেলে ১৯.৫৬ ডলার থেকে ১৩০ ডলারে উঠেছে বলে মনে করিয়ে রাজ্যসভায় আজ পুরী বলেন, ‘‘২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেট্রলের দাম স্থিতিশীল ছিল। এ জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধিদের আনন্দ করা উচিত।’’ সেই সঙ্গে আমেরিকা, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেন, স্পেনের সঙ্গে ভারতে তেলের দামের তুলনামূলক হিসাব দিয়ে মন্ত্রীর দাবি, ‘‘ওই সব দেশে পেট্রলের দাম ৫০%-৫৮% বেড়েছে। কিন্তু ভারতে মাত্র ৫%। তাতে আমাদের আনন্দ করার কথা। পরিবর্তে শুনতে হচ্ছে কেন দাম বাড়ল।’’
পাশাপাশি, কেন্দ্র উৎপাদন শুল্ক কমালেও, মহারাষ্ট্র, কেরল, তেলঙ্গানা-সহ ন’টি রাজ্য মূল্য যুক্ত কর (ভ্যাট) কমায়নি বলে তোপ দেগেছেন তেলমন্ত্রী। তাঁর আশ্বাস, নাগরিকদের জ্বালানির চড়া দর থেকে রেহাই দিতে যা করা সম্ভব, সব করবেন। সরকারের আশা, ভেনেজ়ুয়েলা ও ইরান থেকেও এ বার মিলবে অশোধিত তেল। দরে লাগাম পড়াতে রফতানি বাড়াবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলির গোষ্ঠী ওপেক-ও।