হানান হামিদ
লেখাপড়া চালানোর জন্য মাছ বিক্রি করতে হয় তাঁকে। সেই কাহিনি শুনিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ট্রোলড’ হতে হয়েছিল হানান হামিদকে। পরে বন্যাবিধ্বস্ত কেরলের পাশে দাঁড়ানোয় ফের আলোচনায় আসে তাঁর নাম। সোমবার সকালে গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হলেন কেরলের সেই তরুণী।
পুলিশ জানিয়েছে, কোঝিকোড়ে একটি দোকানের উদ্বোধন সেরে ফিরছিলেন হামিদ। ত্রিশূর জেলার কোদানগাল্লুরের কাছে এক পথচারীকে কাটাতে গিয়ে একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা মারে তাঁদের গাড়িটি। গুরুতর আহত হামিদকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় এর্নাকুলমের একটি হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর মেরুদণ্ডে চোট লেগেছে। অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। আহত হয়েছেন গাড়ির চালকও।
রসায়নের তৃতীয় বর্ষের স্নাতক স্তরের ছাত্রী হামিদের লড়াইয়ের গল্প প্রথম ছাপা হয় একটি মালয়ালি পত্রিকায়। সেখানে হামিদ জানিয়েছিলেন, সংসার ও লেখাপড়া চালাতে কলেজের পরে মাছ বিক্রি করেন তিনি। তার জন্য তাঁকে উজিয়ে আসতে হয় ৬৫ কিলোমিটার পথ। তা ছাড়া, খরচ চালাতে নানা ছবিতে জুনিয়র আর্টিস্ট হিসেবেও কাজ করেন হামিদ। দারিদ্রের সঙ্গে তাঁর সংগ্রামের সেই কাহিনি রাতারাতি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
হামিদের লড়াইকে কুর্নিশ জানায় সোশ্যাল মিডিয়ার একাংশ। অন্য অংশ আবার দাবি করে, গোটা গল্পটাই তাঁর বানানো। সহানুভূতি পাওয়ার জন্য মিথ্যে গল্প ফেঁদেছেন হামিদ। কেউ বলে বসেন, সিনেমায় সুযোগ পাওয়ার জন্য ‘অভিনয়’ করছেন হামিদ। নেট দুনিয়ায় যথেচ্ছ ‘ট্রোল’ করা হয় ওই তরুণীকে। ফেসবুকে কটূক্তি এমনকি হুমকির মুখেও পড়তে হয় তাঁকে। সেই সময়ে হামিদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। হামিদের বিরুদ্ধে প্রচার করার জন্য ২৫ জনকে গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ।
তার পর মাসখানেকের মধ্যে বন্যা বিধ্বস্ত কেরলের পাশে দাঁড়িয়ে ফের শিরোনামে আসেন হামিদ। এ বার, মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দেড় লাখ টাকা দান করার জন্য। হামিদ জানান, তাঁর মাছ বিক্রির কাহিনি ভাইরাল হওয়ার পরে বহু মানুষের কাছ থেকে অর্থসাহায্য পেয়েছিলেন। ‘‘মানুযের থেকে যে সাহায্য পেয়েছিলাম তা ফিরিয়ে দিতে পেরে আমি খুশি’’, বলেছিলেন হানান।