—ফাইল চিত্র।
সোনার গয়নায় হলমার্কিং বাধ্যতামূলক হতে চলেছে। এবং সেটা আগামিকাল বুধবার থেকেই।মঙ্গলবার এক বিবৃতি প্রকাশ করে এমনটাই জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা দফতর। তবে বর্তমান মজুত ভাণ্ডার খালি করতে এবং ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডসে (বিআইএস) নাম নথিভুক্ত করতে এক বছর সময় দেওয়া হয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের। ২০২১-এর ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এই সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ সেরে ফেলতে হবে তাঁদের।
এ দিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান বলেন, ‘‘গয়না বা সোনার জিনিস কেনার সময় সাধারণ মানুষ যাতে ঠকে না যান, তার জন্যই হলমার্কিং বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ বার থেকে বাজারে ১৪, ১৮ এবং ২২ ক্যারাটের হলমার্ক বসানো গয়নাই পাওয়া যাবে। তাতে গয়নার গুণমানও জানতে পারবেন ক্রেতারা আবার দুর্নীতিও দূর করা সম্ভব হবে।’’
সরকারের এই সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষ খুশি হলেও, অসন্তোষ ধরা পড়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে। বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির এক সদস্য বলেন, ‘‘হলমার্কিং লোগো থাকলেও অনেক সময় ক্রেতাদের ঠকিয়ে নেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। ১৮ ক্যারাটের গয়নাকে ২২ ক্যারাট বলে দেখান, যাতে বেশি টাকা হাতানো যায়। তাই এই নিয়ম এনেছে সরকার। কিন্তু এতে ছোট ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়বেন। এই মুহূর্তে সোনার দাম যা দাঁড়িয়েছে, তাতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গিয়েছে। তাই বিক্রিবাটাও কমেছে। এই পরিস্থিতিতে এত নিয়ম-কানুন চাপালে তাঁরা করবেন কী? এ সবের জন্য যা খরচ তাতে ব্যবসা চালানোই দায় হয়ে পড়বে।’’
অখিল ভারতীয় স্বর্ণকার সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক টগরচন্দ্র পোদ্দার বলেন, ‘‘হলমার্ক দিতে যে ৫০০টি গয়না যাচাই কেন্দ্র রয়েছে, তার ৭০ শতাংশই বড় ও মেট্রো শহরে। তাই হলমার্ক বাধ্যতামূলক করলে ছোট ব্যবসায়ীরাই সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বেন। সারা সপ্তাহে যাঁরা একটি আংটির অর্ডার পান, হলমার্ক বসাতে ২০০-৩০০ কিলোমিটার ছুটতে হবে তাঁদের। তার উপর যাতায়াত এবং রেজিস্ট্রেশন বাবদ খরচ তো রয়েইছে। তাহলে তাঁদের সংসারটা চলবে কীভাবে?’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘হলমার্ক নিয়ে আমাদের আপত্তি নেই। তবে সেটা যদি করতেই হয়, তা হলে প্রতিটি ব্লকে হলমার্ক সেন্টার খুলুক সরকার। সরকারতো রীতিমতো দ্বিচারিতা করছে আমাদের সঙ্গে! হস্তশিল্পী হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর এখন নিয়ম-কানুনের বেড়াজালে বেঁধে ফেলছেন। আমাদের শিল্পীসত্তা হরণ করছে সরকার।’’ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা দফতর। রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা দফতর, এমনকি প্রধানমন্ত্রীর দফতরেও তিনি চিঠি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন টগরবাবু।