ভূপেশ বাঘেল। —ফাইল চিত্র।
১০০ বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় নাগরিক বাছাইয়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মহাত্মা গাঁধী। একই ভাবে মোদী সরকারের জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) বিরোধিতা করবেন তিনি। শুক্রবার এমনটাই দাবি করেছেন ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল।
রায়পুরে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন ভূপেশ বাঘেল। সেখানেই সংবাদমাধ্যমের সামনে এনআরসি নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে এক হাত নেন তিনি। বাঘেল বলেন, ‘‘ছত্তীসগঢ়ের ২ কোটি ৮০ লক্ষ জনসংখ্যর অর্ধেকই নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে পারবেন না। না জমি রয়েছে তাঁদের, না আছে জমির রেকর্ড। তাঁদের পূর্বপূরুষরা সব নিরক্ষর ছিলেন। কেউ এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে চলে গিয়েছেন। অন্য রাজ্যেও চলে গিয়েছেন অনেকে। ৫০-১০০ বছর আগের নথি এখন দেবেন কোথা থেকে তাঁরা?’’
এর পরই মহাত্মা গাঁধীর প্রসঙ্গ টেনে আনেন বাঘেল। তিনি বলেন, ‘‘১৯০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় নাগরিক বাছাইয়ের বিরোধিতা করেছিলেন গাঁধীজি। একই ভাবে আমরাও এনআরসি-র বিরোধিতা করব। ওই সংক্রান্ত কোনও নথিতেই সই করব না আমি।’’
এনআরসি-কে নোটবন্দির সঙ্গে তুলনা করে বাঘেল বলেন, ‘‘নোটবন্দির সময় লাইনে দাঁড়িয়ে হেনস্থা হতে হয়েছিল সাধারণ মানুষকে। এখন আবার লাইনে দাঁড়িয়ে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে। আর যাঁরা তা করতে পারবেন না? কোথায় যাবেন সেই সমস্ত মানুষ? কে তাঁদের আশ্রয় দেবে? তা ছাড়া কে অনুপ্রবেশকারী, আর কে নয়, তা দেখার জন্য গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে। তদন্ত করে তারাই অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে পারে। তা না করে সাধারণ মানুষের ঘাড়ে এই বাড়তি বোঝা না চাপালেই কি চলছিল না?’’
এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ চলছে। উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, ম্যাঙ্গালুরু-সহ বিভিন্ন জায়গায় তা চরম আকার ধারণ করেছে। একাধিক জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তাতে সব মিলিয়ে গত তিন দিনে ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এই পরিস্থিতির জন্য শুরু থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করে আসছে বিরোধীরা। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশে কোনও ভাবেই এনআরসি এবং সিএএ হতে দেবেন না বলে জানিয়েছেন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীরা। সেই তালিকায় এ বার নয়া সংযোজন ভূপেশ বাঘেল।