ফাইল চিত্র।
মাস তিনেক আগের ঘটনা। বিপিন রাওয়তের হাত থেকে পুরস্কার নিয়েছিলেন। সেনাদের বিশেষ জুতোর জন্য তাঁর আবিষ্কার ‘কেয়ার ফ্রি সোল’ সে দিন প্রশংসিত হয়েছিল দেশের প্রথম ‘চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ’ (সিডিএস)-এর কাছে। সেনাকর্তার সঙ্গে ফটো-শ্যুটও হয়েছিল। কপ্টার দুর্ঘটনায় সেই সেনা আধিকারিকের মৃত্যুতে বিপর্যস্ত হলদিয়ার বিজ্ঞানী অনির্বাণ দাস। স্মৃতিতে ভেসে উঠছে কাছ থেকে দেখার মুহূর্তগুলো।
হলদিয়ার চৈতন্যপুরের বাসিন্দা অনির্বাণ কলকাতায় ‘ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টে’র অধ্যাপক। ‘ইনোভেশন কাউন্সিলে’র ভাইস প্রেসিডেন্ট তিনি। সঙ্গে মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মালয়া-য় ভিজিটিং সায়েন্টিস্ট প্রফেসর। দেশের সেনাবাহিনীর জন্য নতুন কিছু উদ্ভাবনে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কাজ করছেন তিনি। সম্প্রতি সেনা জওয়ানদের বিশেষ জুতোর জন্য আবিষ্কার করেন ‘কেয়ার ফ্রি সোল’। রোবটিক্স সেন্সর দিয়ে বানানো এই বিশেষ ধরনের সোল জুতোর তলায় ব্যবহার করলে সেখান থেকে কম্পন, তাপমাত্রা ও এক ধরনের শক্তি উৎপন্ন হবে। যা তীব্র ঠান্ডাতেও সুরক্ষিত রাখবে জওয়ানদের পায়ের পাতা।
চলতি বছর ভারত সরকারের ‘ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড রিসার্চ’ অনুমোদিত সংস্থা ‘ইনস্টিটিউট অফ ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ার্স’ (আইইটিই) অনির্বাণের ওই উদ্ভাবনকে ‘বেস্ট ইনোভেটর অ্যাওয়ার্ড’-এর জন্য বেছে নেয়। গত অগস্টে দিল্লিতে আইইটিই-র সদর দফতরে অনির্বাণের হাতে সম্মান তুলে দেন দেশের ‘চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ’ বিপিন রাওয়ত।
অনির্বাণ জানাচ্ছেন, ওই দিন রাওয়ত মিনিট পাঁচেক তাঁর এবং তাঁর ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ‘কেয়ার ফ্রি সোলে’র কার্যকারিতা শুনেছিলেন, প্রশংসা করেছিলেন। সেনাদের কথা ভেবে আরও নতুন কিছু উদ্ভাবনের জন্য অনির্বাণকে উৎসাহিতও করেছিলেন রাওয়ত।
কয়েক মাস আগের সেই সুখস্মৃতিই এখন ভারাক্রান্ত করছে এই বিজ্ঞানীকে। বুধবার তামিলনাড়ুতে বিপিনের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে অনির্বাণ কিছুটা অস্থির। বলছিলেন, ‘‘দেশের বড্ড ক্ষতি হয়ে গেল। এ রকম একজন ব্যক্তিত্বের হাত থেকে সম্মান পেয়েছিলাম। আমি সত্যি সৌভাগ্যবান। উনি নেই ভাবতেই পারছি না।’’