ধ্বংস-চিত্র: ধসের পরে হাফলং রেল স্টেশন। সোমবার ডিমা হাসাওয়ে।
বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে ডিমা হাসাওয়ে যাচ্ছিলেন জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী যোগেন মোহন। বন্যার কারণেই তাঁর আর জেলাসদর হাফলঙে যাওয়া সম্ভব হয়নি। কোনও মতে মাইবাঙে পৌঁছেছিলেন। সেখান থেকেই ফিরে যান তিনি। কারণ ধসের পর ধস নেমেছে অসমের ওই পাহাড়ি জেলায়। বহু জায়গায় রেল ট্র্যাক মাটির তলায়, সড়কের ওপর দিয়ে বইছে জলস্রোত। রবিবার দু-চার জায়গায় সড়ক যোগাযোগ টিকে থাকলেও সোমবার প্রতিটি এলাকা এক-একটা দ্বীপের চেহারা নিয়েছে। জেলাসদর হাফলঙের সঙ্গে মাইবাঙের যোগাযোগ নেই। এমনকি শহরতলি জাটিঙ্গায়ও যাওয়া-আসা বন্ধ।
জেলার প্রতিটি রেলস্টেশনের চেহারা বদলে গিয়েছে। হাফলঙ স্টেশনে হাঁটুসমান কাদা। একটি ফাঁকা ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল সেখানে। পাহাড় ভেঙে জল-কাদা গড়িয়ে যাওয়ার সময় এর পাঁচ-ছয়টি কামরাকে সরিয়ে দিয়েছে। সেগুলি কাত হয়ে দূরে পড়ে আছে। সেখানে অনেকটা জায়গা জুড়ে ট্র্যাক নিশ্চিহ্ন। আরও বহু জায়গায় ট্র্যাকের নীচে থেকে মাটি সরে গিয়েছে। দাওতুহাজা ও ফাইডিংয়ের মধ্যবর্তী তিনশো মিটার এলাকা রেললাইন ঝুলন্ত সেতুর চেহারা নিয়েছে। এর মধ্যে জেলা জুড়ে বিদ্যুৎ নেই। বিঘ্নিত হচ্ছে জল সরবরাহ। মিলছে না ইন্টারনেট পরিষেবাও।
অসমের কাছাড় জেলায়ও নদীর জল গ্রামের পর গ্রাম ভাসিয়ে চলেছে। বাড়ছে বন্যার জলে তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা। সোমবার উদ্ধার হয়েছে বড়খলা থানার নীলছড়ার রাতুল চন্দের দেহ। শনিবার দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে জলের স্রোতে তলিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এ পর্যন্ত জেলায় ৪ জন বন্যার শিকার হলেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছে পাঁচ বছরের শিশু তাসমিন বেগমও। শনিবার এক আত্মীয়ের সাইকেল থেকে জলে পড়ে গিয়েছিল সে। মুহূর্তে তলিয়ে যায়। রবিবার ইলিয়াস আলি নামে এক ব্যক্তির দেহও উদ্ধার হয়। এ ছাড়া, লক্ষীপুরের কার্জন বস্তির জলাশয় থেকে দীপক শুক্লবৈদ্য নামে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার কাটিগড়ায় নৌকো থেকে পড়ে যায় নয় বছরের শিশু হিরনা বেগম। এসডিআরএফ তল্লাশিতে নামলেও খুঁজে পায়নি তাকে।
করিমগঞ্জ জেলায়ও নদীর জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। জগন্নাথ ও চাঁদসীতে বিএসএফ চৌকিতে জল ঢুকে পড়েছে।