এই সমীক্ষার গোটাটাই শান্তিপূর্ণ ছিল বলে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী মহেন্দ্র প্রসাদ। তিনি বলেন, ‘‘কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সোমবার সকালে জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। মসজিদের অন্দরের দু’টি গম্বুজ, ভূগর্ভস্থ অংশ, পুকুর-সহ সব জায়গার পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে।’’
ছবি: পিটিআই।
নির্ধারিত সময়ের আগেই বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দির লাগোয়া জ্ঞানবাপী মসজিদে ভিডিয়োর মাধ্যমে সমীক্ষার কাজ শেষ হল। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি শুরু হবে।
উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে প্রায় আড়াই দিন ধরে চলা এই সমীক্ষার গোটাটাই শান্তিপূর্ণ ছিল। সংবাদমাধ্যমে এ কথা জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী মহেন্দ্র প্রসাদ। তিনি বলেন, ‘‘কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সোমবার সকালে জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। মসজিদের অন্দরের দু’টি গম্বুজ, ভূগর্ভস্থ অংশ, পুকুর-সহ সব জায়গার পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে।’’ সোমবারই এই সমীক্ষার রিপোর্ট তৈরির কাজও শেষ হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এর পর মঙ্গলবার তা শীর্ষ আদালতে পেশা করবেন অ্যাডভোকেট কমিশনার। তবে রির্পোট তৈরির কাজ শেষ না হলে আদালতের কাছ থেকে অতিরিক্ত সময়ের আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী।
প্রসঙ্গত, কাশী বিশ্বনাথ মন্দির চত্বর লাগোয়া জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ‘স্বয়ম্ভু জ্যোতির্লিঙ্গ ভগবান বিশ্বেশ্বর’ নামে একটি কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠন। ওই সংগঠনের দাবি, ১৬৬৪ সালে মোগল সম্রাট অওরঙ্গজেব ২ হাজার বছরের পুরনো কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের একাংশ ধ্বংস করে সেখানে এই মসজিদ গড়ে তোলেন। ফলে জ্ঞানবাপী মসজিদ যে জমিতে গড়ে উঠেছে, তা আদতে হিন্দুদের। সুতরাং হিন্দুদের সে জমি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। মসজিদে ‘হিন্দুত্বের নিদর্শন’ খুঁজতে প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষার দাবি জানায় ওই সংগঠন। যদিও তা নিয়ে আদালতে পাল্টা আবেদন করে জ্ঞানবাপী মসজিদ কমিটি।
বিষয়টি বছর দুয়েক ধরে ঝুলে থাকার পর গত বছরের এপ্রিলে ওই মসজিদে সমীক্ষার অনুমতি দেয় বারাণসীর জেলা আদালত। আদালতের নির্দেশে সে দায়িত্ব দেওয়া হয় ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-কে। সেই নির্দেশ মেনে সম্প্রতি জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে সমীক্ষাও হয়। কিন্তু মসজিদের অন্দরের ‘পশ্চিমের দেওয়াল’ এবং ভূগর্ভস্থ ঘর (তহ্খানা)-ও পুরাতত্ত্ববিদের সমীক্ষার আওতায় পড়বে কি না, আদালতের রায়ে তার স্পষ্ট উল্লেখ ছিল না বলে মসজিদ কমিটির দাবি। বৃহস্পতিবার সে বিষয়ে স্পষ্ট রায় দিয়েছে জেলা আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে স্থগিতাদেশের আবেদন করা হয়। তবে মসজিদের ‘পশ্চিমের দেওয়াল’ এবং ‘তহ্খানা’য় প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষার উপর আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
এর পর শনিবার থেকে আদালত-নিযুক্ত তিন জন পর্যবেক্ষক, এএসআই-এর পুরাতত্ত্ববিদ এবং যুযুধান দু’পক্ষের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ভিডিয়োগ্রাফির সাহায্যে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়ে। সমীক্ষা চলাকালীন সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বারাণসী প্রশাসন। জেলাশাসক কুশলরাজ শর্মা বলেন, ‘‘জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষার যাবতীয় তথ্য আদালতের জিম্মায় থাকবে। এর কোনও তথ্যই সমীক্ষকদের কেউ প্রকাশ্যে আনেননি।’’