ছবি: চিড়িয়াখানার সৌজন্যে।
বেলুনে সাজানো ঘরের ভিতর-বাইরে। তাল মিলিয়ে দেওয়ালে-দেওয়ালে কাগজের শিকলের নকশাও। টেবিলে রাখা পাউন্ড দুয়েকের ‘ব্ল্যাক ফরেস্ট’ কেক। সমবেত ফুঁ-এ ন’টা মোমবাতি নিভে যেতেই ‘হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ খুশি’ গান আর হাততালিতে গমগমিয়ে ওঠে একফালি ঘরটা। সমবেত উচ্ছ্বাসকে ধন্যবাদ জানিয়ে খুশি বলে ওঠে ‘ঘ্যাঁও!’
তার তো হাত নেই। আছে থাবা। তাই খুশির হয়ে কেক কাটতে ছুরি ধরেন আবিদ আলি। জন্মদিনের কেক কাটা হতেই সেদিকে একবার নিরাসক্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে খুশি মন দেয় নিজের পাতের মাংসের দিকে।
আরও পড়ুন:
৮০ পাওয়া ছাত্রীকে ৭ দিল বিহার বোর্ড, নম্বর ফেরাল হাইকোর্ট
মুম্বইয়ের রাস্তায় কিশোরীকে মার, দর্শক জনতা, দেখুন সেই ভিডিও
খুশির জন্মদিন উপলক্ষে গুয়াহাটি চিড়িয়াখানায় গত কাল বিকেল থেকে ছিল উৎসবের আবহ। ন’বছরে পা দেওয়া খুশি আদতে সাদা বাঘিনী। গুয়াহাটি চিড়িয়াখানার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ থাকা সাদা বাঘের সংখ্যা ক্রমেই কমছে। আপাতত খুশি আর তার চার বছরের কন্যা নন্দিনীই সাদা বাঘ পরিবার টিমটিমে দুই সদস্য।
চিড়িয়াখানার ডিএফও তেজাস মারিস্বামী জানান, চিড়িয়াখানয় থাকা প্রাণীদের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে ও বাচ্চাদের মধ্যে পশুপ্রেম ছড়ানোর জন্য প্রতি মাসে চিড়িয়াখানর বাসিন্দাদের জন্মদিন পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথম জন্মদিন পড়ে খুশির। ২০০৮ সালে ওড়িশার নন্দন কানন থেকে বছরখানেকেরও কম বয়সী খুশিকে গুয়াহাটি চিড়িয়াখানায় আনা হয়েছিল।
তিন দিন আগে থেকে ডিএফও ফেসবুকে রাজ্য চিড়িয়াখানার পেজে খুশির জন্মদিনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সকলকে। সন্তান ধারণের সময় থেকে অ্যানিমাল কিপার আবিদ আলি খুশির দেখভাল করেন। তাই গত কাল খুশির জন্মদিনে স্থানীয় অভিভাবকের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন তিনি। গত কাল বিকেলে বনকর্তাদের উপস্থিতিতে, প্রচুর বাচ্চার হাততালিকে সাক্ষী রেখে আবিদ খুশির জন্মদিনের কেট কাটেন। সকালে খুশির জন্য আসে মুরগির মাংসের প্রাতরাশ। দুপুরে গোমাংস। জন্মদিনের কেক যখন সকলের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে, তখন খুশিকে দেওয়া হয় বিফ স্লাইস। মেয়েকে নিয়ে নিজের জন্মদিন পালনের উৎসব তারিয়ে উপভোগ করে খুশি। সব শেষে বাচ্চারা খুশি আর নন্দিনীকে টা-টা করে ফেরার পথ ধরে। জবাবি হালুম-এ অতিথিদের বিদায় জানায় ‘বার্থ ডে গার্ল’।