—প্রতীকী ছবি।
রক্ষণশীল হিন্দু পরিবারের মেয়ে হয়েও কাশ্মীরের এক মুসলিম যুবককে বিয়ে করতে চাওয়ায় তিন মাস ধরে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল মাদকাসক্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে। নিজের মা, ভাই ও মামার বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুললেন এক মহিলা ডিজে। সম্প্রতি মেঘালয় থেকে উদ্ধার হওয়ার পরে দামিনী ভজঙ্কা নামে ওই তরুণী কর্মস্থল মুম্বইয়ে ফিরেছেন। পছন্দের সঙ্গীকেই বিয়ে করেছেন। তিনি ও তাঁর স্বামীর দাবি, অসম পুলিশ ও মহিলা কমিশনে বার বার বলেও কোনও লাভ হয়নি।
দামিনী উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম কয়েক জন মহিলা ডিজে-র অন্যতম। কাশ্মীরি যুবক ওয়াসিম রাজা মুঘলের সঙ্গে লিভ ইন সম্পর্কে ছিলেন তিনি। দামিনীর অভিযোগ, তাঁর পরিবার প্রথমে বেঁকে বসলেও শেষে মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ও সম্পত্তির কিছু কাগজে সই করার কথা বলে তাঁকে গুয়াহাটিতে ডাকে। গত ডিসেম্বরে তিনি পৌঁছনো মাত্র তাঁর নিজের ভাই ও তুতো ভাই তাঁর ফোন ও অন্য সব কিছু কেড়ে তাঁকে বিমানবন্দর থেকে সোজা মাদকাসক্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে এনে তোলেন। দামিনীর দাবি, কোনও দিন তাঁর মাদকাসক্তি ছিল না। ফোনে আনন্দবাজারকে তিনি বলেন, ‘‘আমার কোনও মাদকের পরীক্ষা হয়নি। প্রমাণ ছাড়া তিন মাস আটকে রেখে মারধর করা হয়েছে। ফোন, সব পরিচয়পত্র রেখে দিয়েছে ভাই। আমার সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্টও ডিঅ্যাক্টিভেট করে দিয়েছে।’’
দামিনী জানান, দু’মাস পরে দেখা করতে এলেও তাঁর মা তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাননি। ও দিকে, গুয়াহাটি পুলিশ থেকে জাতীয় মহিলা কমিশন, গৌহাটি হাই কোর্টে আবেদন জানিয়ে যাচ্ছিলেন ওয়াসিম। তাঁর অভিযোগ, কোথাওই লাভ হয়নি। শেষে দামিনীর ছবি নিয়ে রাস্তায় আন্দোলনে নামেন ওয়াসিম। তা বিভিন্ন সংবাদপত্রে বেরোনোয় ১১ মার্চ দামিনীকে গুয়াহাটি থেকে মেঘালয়ে নিয়ে যায় তাঁর পরিবার। দামিনীর দাবি, এক দিন মা তাঁকে ফোন দিয়ে বলেন, তিনি ভাল আছেন ও তাঁকে কেউ জোর করে আটকে রাখেনি বলে ভিডিয়ো বার্তা রেকর্ড করে দিতে। সেই মোবাইল নিয়ে দরজা বন্ধ করেই দামিনী ফোন করেন ওয়াসিমকে। মুক্তি চেয়ে ভিডিয়ো বার্তাও রেকর্ড করে দেন। ওয়াসিমের তরফে সেই ভিডিয়ো পেয়ে মেঘালয় পুলিশ ১২ মার্চ দামিনীকে উদ্ধার করে। প্রথমে মেঘালয় পুলিশ ও মুম্বই ফিরে ভারসোভা থানায় পরিবারের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দেন দামিনী।
গুয়াহাটির ওই পুনর্বাসন কেন্দ্রের দাবি, পরিবারের অনুমতি নিয়েই দামিনীকে সেখানে রাখা হয়েছিল। পুলিশের যুক্তি, মাদকাসক্ত কন্যাকে নিজের মা পুনর্বাসন কেন্দ্রে রাখলে তাকে অপহরণ বলা চলে না।