গুয়াহাটিতে দু’দিনের বৈঠকে মিলিত হলেন ভারত-বাংলাদেশের মন্ত্রী-আমলারা। —নিজস্ব চিত্র।
ভারত-বাংলাদেশ বন্দর ব্যবহার চুক্তির পরে প্রথম বার দু’দেশের জাহাজ মন্ত্রক, জলপথ পরিবহণ মন্ত্রকের শীর্ষ কর্তারা এবং শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রী-আমলারা গুয়াহাটিতে দু’দিনের বৈঠকে মিলিত হলেন।
অসমের অ্যাক্ট ইস্ট ও বাণিজ্যমন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি জানান, গুয়াহাটি-ঢাকা বিমান ১৫ দিনের মধ্যে চালু হবে। শীঘ্র গুয়াহাটি-ঢাকা বাস চালু হবে। সিলেট-শিলচর বাস চালানোর প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে বিদেশ মন্ত্রকে। পাটোয়ারি কক্সবাজার ইন্টারেট গেটওয়ে ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশকে দর কমাতে বলেন।
বাংলাদেশের তরফে জানানো হয়, ভারত থেকে আসা পলিই পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল ও বন্দর ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা। আলোচনায় দ্রুত ড্রেজিংয়ে সবচেয়ে জোর দেওয়া হয়। আশু সমাধান হিসেবে ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি আবদুল মতলুব জানান, শুধুমাত্র অসমের জন্য তাঁরা ৬ মাসের মধ্যে ৫০টি এক মিটার নাব্যতার বার্জ তৈরি করে দেবেন। অসমের স্বাস্থ্য পর্যটনকেও তুলে ধরবে চেম্বার।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে ক্ষমতায় ফিরলেও স্তিমিত গেরুয়া হাওয়া, দর বাড়াচ্ছে শিবসেনা, শক্তিবৃদ্ধি বিরোধীদের
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি জানান, উত্তর-পূর্বে ফুড পার্ক গড়লে বাংলাদেশের সংস্থা ৫০ শতাংশ ভর্তুকি পাবে। বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি ও অন্যান্য কর্তাদের সঙ্গে পোশাক, স্বাস্থ্য পরিষেবা, তথ্য প্রযুক্তি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে যৌথ ভাবে কাজ করার ব্যাপারে বৈঠকে মিলিত হন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। ঠিক হয়, অসমের মুখ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাণিজ্য টাস্ক ফোর্স তৈরি হবে যা প্রতি বছর চার বার মিলিত হবে।
বাংলাদেশের বাণিজ্য সংস্থাগুলি অসম চা উৎপাদকদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। বাংলাদেশ জাহাজ মন্ত্রকের সচিব আবদুস সামাদ জানান, আগামী পাঁচ বছরে দেশের ৭০০ নদীতে ড্রেজিং চালিয়ে দশ হাজার কিলোমিটার জলপথ সৃষ্টি করার লক্ষ্য নিয়েছে হাসিনা সরকার।
ভারতের অভ্যন্তরীণ জলপথ দফতরের চেয়ারপার্সন অমিতা প্রসাদ জানান, নতুন জলপথ কলকাতা-আগরতলার দূরত্ব ৮০০ কিলোমিটার কমিয়ে আনবে। বারাণসী থেকে হলদিয়া ও বাংলাদেশ হয়ে অসমের শদিয়া ও অন্য দিকে ত্রিপুরা পর্যন্ত যেতে পারবে জাহাজ।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী খট্টরকে দিল্লিতে তলব অমিতের, ইস্তফা দিতে চাইলেন হরিয়ানার বিজেপি প্রধান
সহকারী হাইকমিশনার তনভির মনসুর বলেন, অসমের মানুষের বাংলাদেশ নিয়ে মানসিক ব্যবধান ও ভুল ধারণা দূর করতে যাতায়াত বাড়াতেই হবে। পর্যটকদের জন্য অন অ্যারাইভাল ভিসা, করিমগঞ্জে মাল্টিমোডাল লজিস্টিক পার্ক তৈরি, উত্তর-পূর্বের সীমান্তগুলি সব পণ্যের জন্য খুলে দেওয়া, বেনাপোলে ২৪ ঘণ্টা ক্লিয়ারেন্স ও ডিজিটাইজেশনের প্রস্তাব আসে। দু’দিনে ২০টির বেশি বাণিজ্যচুক্তি সই হয়েছে। প্রকাশিত হয় শেখ মুজিবের আত্মজীবনী কারাগারের দিনলিপির অসমিয়া অনুবাদ।