ফল হচ্ছে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের চিঠিতে। মানা হচ্ছে না সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশও! অসমের বাসিন্দা গোর্খাদের নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ চলছে। এ রাজ্যে বিশ লক্ষাধিক গোর্খার বাস। তার মধ্যে এক লক্ষ গোর্খা বাদ পড়েছেন এনআরসির খসড়া থেকে। গুয়াহাটিতে আজ এর তীব্র প্রতিবাদ জানাল ভারতীয় গোর্খা পরিষদ ও অসম গোর্খা ছাত্র সংগঠন।
অসমকে বিদেশিমুক্ত করতে যে অসম আন্দোলন শুরু হয়েছিল, যার সূত্রে হয় অসম চুক্তি ও এখনকার এই এনআরসি নিয়ে উদ্যোগ— সেই আন্দোলনের প্রথম মহিলা শহিদ বৈজয়ন্তী দেবী। তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী ও দুই ভাইপোর নামও সদ্য প্রকাশিত অতিরিক্ত তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন প্রয়াত বৈজয়ন্তীদেবীর বাবা অমর উপাধ্যায়। তাঁর বংশ পরিচয়ই ব্যবহার করেছিল গোটা পরিবার। এমনকি অসমের স্বাধীনতা সংগ্রামী চাবিলাল উপাধ্যায়ের প্রপৌত্রী মঞ্জুদেবীর নাম ডি-ভোটারের তালিকায় ঢুকিয়ে দেওয়ায় তাঁর ছেলেমেয়েদের নামও এনআরসির খসড়া তালিকায় ওঠেনি। ক্ষিপ্ত মঞ্জুদেবী আরটিআই আবেদন করে সীমান্ত শাখার ছাড়পত্র আনার পরেও তাঁদের নাম তোলা হয়নি।
এই সব ঘটনার তীব্র নিন্দা করে ভারতীয় গোর্খা পরিষদ বলে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অক্টোবরে অসম সরকারকে চিঠি দিয়ে জানায়, কোনও গোর্খার নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহ করে বিদেশি ট্রাইবুনালে মামলা পাঠানো চলবে না। কোনও গোর্খাকে ডিটেনশন সেন্টারে রাখা যাবে না। অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবেও গণ্য করা চলবে না কোনও গোর্খাকে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈও গত বছর নভেম্বরে রাজ্য সরকার এবং এনআরসি কো-অর্ডিনেটরকে স্পষ্ট নির্দেশ দেন, গোর্খারা দেশের সম্পদ। কোনও গোর্খা যেন এনআরসির বাইরে না-থাকে। কিন্তু তার পরেও অসম সরকার গোর্খাদের নামে ডি-ভোটার তালিকায় জুড়ছে। তাদের নাম এনআরসি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে।
ভারতীয় গোর্খা পরিষদের অসম প্রদেশের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দহলের দাবি, ‘‘এটা পুরোপুরি অন্যায়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে গেজেট নোটিফিকেশন প্রকাশ করা উচিত।’’ অসম গোর্খা ছাত্র সংগঠনের সভাপতি প্রেম তামাং দাবি করেন, ‘‘চূড়ান্ত এনআরসি প্রকাশের আগেই গোর্খাদের নাগরিকত্বের বিষয়টি নিয়ে স্থায়ী সমাধান হয়ে যাওয়া দরকার।’’