—ফাইল চিত্র।
বন্দিদশা কাটিয়ে ফেরার পর থেকেই ৩৭০ ধারা ফিরিয়ে আনার দাবিতে সরব হয়েছেন উপত্যকার রাজনীতিকরা। সেই দাবি নিয়েই আসন্ন জেলা উন্নয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের এই অবস্থানকে জাতীয় স্বার্থবিরোধী বলে উল্লেখ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস এবং উপত্যকার বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি কাশ্মীরে বিদেশি শক্তিকে নাক গলাতে আহ্বান জানাচ্ছে।
আগামী ২৮ নভেম্বর উপত্যকায় জেলা উন্নয়ন পরিষদের নির্বাচন। গত বছর কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার এবং উপত্যকাকে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করার পর এই প্রথম নির্বাচন হচ্ছে সেখানে। তা নিয়ে সব দলই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার কংগ্রেস এবং উপত্যকার বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে তীব্র আক্রমণ করেন শাহ। কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার রক্ষায় ‘গুপকার ঘোষণাপত্র’-এ স্বাক্ষরকারী ওই দলগুলিকে ‘গুপকার গ্যাং’ বলে কটাক্ষও করেন তিনি।
এ দিন নিজের টুইটার হ্যান্ডলে শাহ লেখেন, ‘গুপকার গ্যাং বিশ্বায়নের পথে হাঁটছে। আরা চায়, জম্মু ও কাশ্মীরে বিদেশি শক্তিকে নাক গলাক। প্রতিনিয়ত তেরঙ্গার অবমাননা করে ওরা। গুপকার গ্যাংয়ের এই ধরনের আচরণ কি সনিয়াজি এবং রাহুলজি সমর্থন করেন? ওঁদের নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করা উচিত। কংগ্রেস এবং গুপকার গ্যাং জম্মু ও কাশ্মীরকে সন্ত্রাস এবং অশান্তিরে যুগে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায়। দলিত, মহিলা ও উপজাতিদের অধিকার কেড়ে নিতে যায়, ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে আমরা যা সুনিশ্চিত করেছিয় এই কারণেই সর্বত্র মানুষ ওদের প্রত্যাখ্যান করছে।’
আরও পড়ুন: নীলবাড়ি দখলে কোনও নিরীক্ষা নয়, পরীক্ষিত সৈনিকেই ভরসা মোদী-শাহর
শাহ আরও বলেন, ‘‘জম্মু ও কাশ্মীর চিরকাল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে দেশের মানুষ এই অসাধু ‘বৈশ্বিক জোট’-কে সহ্য করবেন না। হয় দেশবাসীর মেজাজের সঙ্গে গা ভাসিয়ে চলতে হবে গুপকার গ্যাংকে নইলে দেশবাসী ওদের ডুবিয়ে ছাড়বেন’।
এ ব্যাপারে অমিত শাহের সঙ্গে একমত অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও। তিনি লেখেন, ‘অমিতজি ঠিক বলেছেন। যত দিন যাচ্ছে, ততই টুকড়ে টুকড়ে নকশালদের কাছে আশ্রয় নিচ্ছে কংগ্রেস। ভারতে অশান্তি বাঁধাতে যারা বিদেশি শক্তির সাহায্য নেয়, তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার এই চেষ্টায় কংগ্রেসের আসল প্রবৃত্তি ফাঁস হয়ে গিয়েছে। দেশের মানুষ কংগ্রেসের কাছে জবাব চায়’।
তবে প্রতিনিয়ত যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে চলেছে, তাদের মুখে এমন মন্তব্য হাস্যকর বলে শাহের টুইটের জবাবে এ দিন পাল্টা বিজেপিকে আক্রমণ করেন উপত্যকার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘এটা ওদের পুরনো অভ্যাস। আগে বিজেপি বলত, টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং ভারতে সার্বভৌমিকতার পক্ষে বিপজ্জনক, এখন আবার গুপকার গ্যাং নিয়ে পড়েছে। আমাদের দেশদ্রোহী হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে। বিজেরি মুখে এমন মন্তব্য হাস্যকর কারণ প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে সংবিধান লঙ্ঘন করে ওরা’।
আরও পড়ুন: ফুরফুরার পিরজাদা ত্বহার সঙ্গে বৈঠকে বসছেন অধীর-মান্নান
কাশ্মীর প্রসঙ্গে গতকাল কংগ্রেস এবং উপত্যকার বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে একহাত নেন বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদও। শত্রুদেশগুলির সঙ্গে ‘গুপকার গ্যাং’-এর কোনও পার্থক্য নেই বলে মন্ত্বব্য করেন সম্বিত। ‘গুপকার গ্যাং’ দেশ বিরোধী কাজে লিপ্ত। সনিয়া এবং রাহুল গাঁধীকে অবিলম্বে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে বলে দাবি জানান রবিশঙ্কর।