পাঠানকোটের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে কড়া পাহারা।
পাঠানকোটের বায়ুসেনা ঘাঁটিকে এখনও পুরোপুরি ভাবে জঙ্গিদের কবল-মুক্ত করা যায়নি। সেনা ঘাঁটিতে এখনও এক বা একাধিক জঙ্গি রয়েছে বলে খবর। বায়ুসেনা ঘাঁটিতে আজ রাতের অন্ধকারে ফের শোনা গিয়েছে প্রচুর গোলা-গুলির শব্দ। সেনা সূত্রের খবর, ঘাঁটির জওয়ানদের লক্ষ্য করে মাঝে-মধ্যেই ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি ছুটে আসতে দেখা গিয়েছে। কিছু ক্ষণ থেমে থাকার পর আবার গুলিবর্ষণ চালিয়েছে জঙ্গিরা। আর সেই গুলিবর্ষণ একই সময়ে কোনও একটি নির্দিষ্ট দিক থেকে আসছে না বলে বায়ুসেনা কর্তাদের অনুমান, এখনও সেনা ঘাঁটিতে লুকিয়ে রয়েছে একাধিক জঙ্গি। এয়ার মার্শাল অনিল খোসলা বলেছেন, ‘‘দুপুরের দিকে মনে হয়েছিল, অন্তত দু’জন জঙ্গি এখনও লুকিয়ে রয়েছে সেনা ঘাঁটিতে।’’ তবে এখন সেনা কর্তাদের ধারণা, সংখ্যাটা আরও বেশি হতে পারে।
পাঠানকোটে জঙ্গি হামলার জেরে আহত তিন জওয়ানের মৃত্যু হল রবিবার। জঙ্গি হামলায় এই নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬। শনিবারেই বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জঙ্গিদের নিকেশ করতে গিয়ে নিহত হয়েছিলেন ৩ জওয়ান। আহত হয়েছিলেন বেশ কয়েক জন জওয়ান। হাসপাতালেই এ দিন মৃত্যু হয় ওই তিন জনের।
এ দিকে, এ দিন সকালে বায়ুসেনা ঘাঁটিতে তল্লাশি চালানোর সময় গ্রেনেড নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন আরও চার জওয়ান। আহতদের মধ্যে ছিলেন এনএসজি-র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নিরঞ্জন। পরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে সেনা সূত্রে খবর। জঙ্গিদের ব্যবহার করা বেশ কয়েকটি একে-৪৭ রাইফেল ও মর্টার উদ্ধার করা হয়েছে।
এই ঘটনার পরেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে জম্মু, অবন্তীপুর, শ্রীনগর এবং উধমপুরের বায়ুসেনা ঘাঁটিগুলিতে। সূত্রের খবর, জঙ্গিরা একটি ‘ইনোভা’ গাড়ি ভাড়া করে পাকিস্তান থেকে এসেছিল। সীমান্তে আসার পর ওই গাড়ির চালককে গুলি করে মারে জঙ্গিরা।
জঙ্গি হামলার ১২ ঘণ্টা কাটতে না-কাটতে এ দিন সাতসকালেই ফের গুলির শব্দ শোনা যায় পাঠানকোটের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে। এনএসজি-র তল্লাশি চলার সময় দু’রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায় বলে সূত্রের খবর। ফের জঙ্গি হামলার আতঙ্ক ছড়ায় গুলির শব্দে। কিন্তু এনএসজি সূত্রে জানানো হয়, বায়ুসেনা ঘাঁটিতে সন্দেহজনক কিছু দেখার পরই গুলি চালায় জওয়ানরা। জোর কদমে তল্লাশি শুরু করে এনএসজি ও পঞ্জাব পুলিশ। কোথাও কোনও জঙ্গি রয়েছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখছে যৌথবাহিনী। শনিবার ১৬ ঘণ্টার লড়াইয়ের পর চার জঙ্গিকে খতম করে এনএসজি। রাতভর চিরুনি তল্লাশি চালানো হয় বায়ুসেনা ঘাঁটি এবং সংলগ্ন এলাকায়। পাশাপাশি হেলিকপ্টারের মাধ্যমেও চলে নজরদারি।