সস্ত্রীক শিবাং দাভে।
মৃত্যু যেন কান ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছে! কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের পর এমনটাই জানালেন গুজরাতের এক দম্পতি। বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে তাঁরা ওই বিমানবন্দর থেকে ভারতের বিমান ধরেছেন। যেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে, বিমানবন্দরে ঢোকার আগে সেই জায়গাতেই ছিলেন গুজরাতের দাভে দম্পতি। সঙ্গত কারণেই বিস্ফোরণের খবর পেয়ে শিউরে উঠেছেন তাঁরা। বার বার বলছেন, ‘‘বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছি।’’
দেশের মাটিতে পা রেখে যেন স্বস্তি পেয়েছেন দাভে দম্পতি। কাবুল থেকে যে ৮০০ ভারতীয়কে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে, ‘সৌভাগ্যক্রমে’ সেই তালিকায় ঢুকে পড়তে পেরেছিলেন গুজরাতের ওই দম্পতি। তবে একটা সময় মনে হয়েছিল, আর বোধহয় দেশে ফেরা হবে না। এমনটাই জানিয়ছেন তাঁরা। গত ১৫ বছর ধরে আফগানিস্তানের একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করছিলেন গুজরাতের বাসিন্দা শিবাং দাভে। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। শুধু তাই নয়, প্রখ্যাত গুজরাতি কবি হরীন্দ্র দাভের নাতি শিবাং।
শিবাং জানান, তালিবান আফগানিস্তান দখল করার পর থেকেই পরিস্থিতি পুরো বদলে যায়। রাস্তার সর্বত্রই তালিব জঙ্গিরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। চার দিকে আতঙ্কের পরিবেশে। ভয়ে কেউ ঘর থেকে বেরোচ্ছেন না। চোখের সামনে একের পর এক শিউরে ওঠা ঘটনাগুলি ঘটতে শুরু করে। শিবাং বলেন, “তালিবানের কবল থেকে মুক্তি পেতে বাড়়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম কাবুল বিমানবন্দরের উদ্দেশে। রাস্তার জায়গায় জায়গায় শুধু তালিব জঙ্গিরা চেকিং করছে। সেটা দেখে আরও ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। মনে হয়েছিল, ফিরতে পারব তো? শেষমেশ তালিবদের হাতে বেঘোরে মরতে হবে না তো?”
একটা আতঙ্ক নিয়ে একটু একটু করে বিমানবন্দরের দিকে এগোচ্ছিলেন শিবাং এবং তাঁর স্ত্রী। কিন্তু বিমানবন্দরে যাওয়ার বেশির ভাগ রাস্তাই বন্ধ করে দিয়েছিল তালিব জঙ্গিরা। যে রাস্তা খোলা ছিল, তাতে কড়া পাহারা তাদের। কোথায় যাওয়া হচ্ছে, কেন যাওয়া হচ্ছে— এমন নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের। শিবাংয়ের স্ত্রী বলেন, “কোনও ক্রমে বিমানবন্দরের সামনে পৌঁছতেই তালিব জঙ্গিরা আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায়। তখন মনে হয়েছিল, আর বোধ হয় বেঁচে ফিরব না। কিছুক্ষণ পরে স্ত্রী ফেরে।” তবে শেষমেশ ফিরতে পেরে খুশি ওই দম্পতি।