কোন পথে গুজরাত: লড়াই শুরু।
টান টান উত্তেজনার মধ্যেই আজ শনিবার গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হল।
এ দিন রাজ্যে মোট ১৮২টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে এ দিন ৮৯টিতে নির্বাচন হয়। বাকি ৯৩টি আসনে ভোট হবে আগামী ১৪ ডিসেম্বর। মোট ২ কোটি ১২ লাখ ৩১ হাজার ৬৫২ জন ভোটার ৯৭৭ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করেন এ দিন।
দক্ষিণ গুজরাত, সৌরাষ্ট্র, কচ্ছ এবং কাঠিয়াবাড় অঞ্চলে সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ পর্ব শুরু হয়। শেষ হয় বিকেল ৫টায়।
আরও পড়ুন: রাম-নামে হবে না, গুজরাতে আশায় কংগ্রেস
• বিজেপি নেতা জামাল ব্যাস বলেন, “প্রথম দফার নির্বাচনেই কংগ্রেস বুঝে গিয়েছে জয় হচ্ছে না। তাই কংগ্রেস অজুহাত খুঁজতে শুরু করেছে। ইভিএম কারচুপির অভিযোগ অজুহাত মাত্র।নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ সংস্থা। তারা নিশ্চয়ই বিজেপির হয়ে কাজ করছে না। কমিশন আগেই সব দলকে দিল্লিতে ডেকেছিল। বলেছিল দেখান কী ভাবে ইভিএম-এ কারচুপি করা যায়। কেউ পারেননি। তাই এখন নতুন করে ওই একই অভিযোগ তোলা অর্থহীন।”
• বিকেল ৫টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে যাঁরা ভোট দিতে পারেননি, তাঁদের টোকেন দেওয়া হয়েছে। রাত পর্যন্ত সেই সব কেন্দ্রে ভোট চলবে বলে কমিশন সূত্রে খবর।
• প্রায় ১০০ ইভিএম-এ গণ্ডগোল দেখা দেয়। সেগুলো বদলে দেওয়ার পর ফের ভোট শুরু হয়।
• পোরবন্দর, রাজকোট, সুরেন্দ্রনগরে ইভিএম জালিয়াতির চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। গুজরাত প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র মণীশ দোশী বলেন, “ওয়াই-ফাই এবং ব্লুটুথ ব্যবহার করে ইভিএম জালিয়াতি করার চেষ্টা হয়েছে। কংগ্রেসের কাছে এর স্ক্রিনশট আছে। পোরবন্দরের ঘটনায় ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়েছে। কমিশন বিষয়টা খতিয়ে দেখছে।
• নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, সুরাত এবং বেশ কিছু ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ইভিএমে প্রযুক্তিগত সমস্যার খবর পাওয়া গিয়েছে। সেই খবর পাওয়ার পরই ত্রুটিযুক্ত মেশিনগুলো পাল্টে দেওয়া হয়েছে। ৭-৮টা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ইভিএম কারচুপির অভিযোগ উঠেছে বলেও জানায় কমিশন।
• কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, “ভোটদানের হার দেখে বুঝতে পারছি এ বার আমরা বিপুল ভাবে জিতব। গুজরাতকে যে ভাবে উন্নয়নের মডেল তৈরি করেছে বিজেপি, তা নিয়ে কোনও দল প্রশ্ন তুলতে পারবে না।” কংগ্রেস যে ইভিএম কারচুপির অভিযোগ তুলেছে সে প্রসঙ্গে জেটলি বলেন, “প্রতি নির্বাচনেই ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এটা নতুন কিছু নয়। নির্বাচন কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।”
• কংগ্রেস নেতা অর্জুন মোড়ওয়ারিয়ার অভিযোগ, পোরবন্দরের সারদা মন্দিরের ১৪৫, ১৪৬ ও ১৪৭ নম্বর বুথে ব্লু টুথ ডিভাইসের মাধ্যমে ইভিএমে কারচুপি করা হয়েছে। বিষয়টি তিনি নির্বাচন কমিশনকে জানান।
সুরেন্দ্রনগরে ভোট দিতে আসছেন মহিলারা। ছবি: রয়টার্স।
• ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ আনল কংগ্রেস। কংগ্রেসের এই অভিযোগকে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিল নির্বাচন কমিশন।
• কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল বলেন, “বেশ কিছু বুথে ইভিএম কারচুপির খবর পেয়েছি। নির্বাচন কমিশনের কাছে আর্জি জানিয়েছি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।”
• ভোট নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণীর ছেলে ঋষভ রূপাণী বলেন, “পুরো সৌরাষ্ট্র, কচ্ছ এবং দক্ষিণ গুজরাতজুড়ে আজ একটাই ছবি— মানুষ দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন। আমাদের আশা এ বার রেকর্ড ভোট পড়বে। হিমাচলে যে ভাবে রেকর্ড ৭০% ভোট পড়েছে, সে ভাবেই গুজরাতে ভোটের হার ৮৫% পৌঁছে যাবে বলে আশা রাখছি। গুজরাতের যুব সমাজের কাছে আমার বিশেষ আবেদন, সবাই এগিয়ে আসুন, নিজেদের মূল্যবান মতামত জানান। আমি সবাইকে বলছি, ভোট ফর গুজরাত, ভোট ফর ইন্ডিয়া।”
১০.৫৫: সুরাতে সপরিবারে ভোট দিলেন বিজেপি সাংসদ সি আর পাটিল।
• সুরাতের বারাচা, পোরবন্দরের জেতপুর, ভালসার জেলার বাপি-সহ কয়েকটি জায়গায় ইভিএম খারাপের খবর পাওয়া গিয়েছে।
১০.২৫: ভারুচের আঙ্কলেশ্বরে ভোট দিলেন শীর্ষ কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল। তাঁর দাবি, কংগ্রেস ১১০টির বেশি আসন জিতবে।
১০.০৩: রাজকোটে ভোট দিলেন ক্রিকেটার চেতেশ্বর পূজারা। তিনি গুজরাত নির্বাচন কমিশনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর।
• সৌরাষ্ট্র ও দক্ষিণ গুজরাত অঞ্চলে ভোটারদের উপস্থিতির হার ভালই।
• রাজকোট দক্ষিণে ইভিএম কাজ না করার জন্য নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট পরে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
৮.৫৮: রাজকোটে ভোট দিলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী। তিনি রাজকোট পশ্চিম কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস প্রার্থী ইন্দ্রনীল রাজগুরুর বিরুদ্ধে লড়ছেন।
• জিতুভাই ভাগানির দাবি, কোনও বাধা ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রমোদীর নেতৃত্বে ১৫০টির বেশি আসন জিতবে বিজেপি।
• ভাবনগরে ভোট দিলেন গুজরাত বিজেপির প্রধান জিতুভাই ভাগানি।
• প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার সকালে টুইট করে বলেন, “গুজরাতে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ শুরু। আপনারা প্রত্যেকেই ভোট দিন।” যুব সম্প্রদায়কে ভোটদানে অংশগ্রহণে আহ্বান জানান মোদী।
রাজ্যে গত ২২ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। আর কংগ্রেসবিরোধী আসনে। এর আগের তিনটি বিধানসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীই ছিলেন এ রাজ্যে বিজেপি-র মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী। কিন্তু, এখন তিনি প্রধানমন্ত্রী।আবার বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের আপন রাজ্যও এই গুজরাত। ফলে বিজেপি-র কাছে এই নির্বাচন সব অর্থেই সম্মান রক্ষার লড়াই। অন্য দিকে, বিরোধী কংগ্রেসও এ বার অনেক চাঙ্গা।
ক্ষত্রিয়-হরিজন-আদিবাসী-মুসলিম, এই পরিচিত ভোটব্যাঙ্ক ছাড়াও কংগ্রেস এ বার হাত বাড়িয়েছে পাতিদার, ওবিসি এবং দলিত ভোটব্যাঙ্কের দিকে। অতএব, দেড় দশক পর এ রাজ্যে বিজেপির জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ কিন্তু কংগ্রেস।
গুজরাত নির্বাচন নিয়ে সব খবর পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এ রাজ্যে পতিদার এবংপটেল ভোট ১৩ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ।এর মধ্যে লেউভা পটেল ৮.১১ শতাংশ। কড়ভা পটেল ৬.৪২ শতাংশ। মুসলিম ভোট ৯.১ শতাংশের মতো।আদিবাসী বা তফসিলি উপজাতি ভোট প্রায় ১৫ শতাংশ।তফসিলি জাতির ভোট ৭.১ শতাংশ।ব্রাহ্মণ ভোট ১০ শতাংশ।
২০১৫-র পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিসাব বলছে, ২৩টি জেলা পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৯টিতেই কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল। তালুকা পঞ্চায়েত স্তরেও কংগ্রেস অনেক এগিয়ে ছিল বিজেপি-র থেকে। কিন্তু, গুজরাতে শহুরে ভোটও অনেক। সেখানে বিজেপি-র দাপট নাকি এখনও বেশি। কাজেই এ বারের নির্বাচন কিন্তু এক্কেবারে সেয়ানে সেয়ানেই।