সৌরদীপ সেনগুপ্ত। ছবি— ফেসবুক।
দিল্লির হিংসার ঘটনা প্রসঙ্গে বিতর্কিত মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে গ্রেফতার হলেন এক কলেজ শিক্ষক। অসমের গুরুচরণ কলেজের পদার্থ্যবিদ্যা বিভাগের ওই অতিথি শিক্ষকের নাম সৌরদীপ সেনগুপ্ত। শুক্রবার রাতে পুলিশ প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তনী সৌরদীপকে তাঁর শিলচরের ইটখোলার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। এ দিন তাঁকে আদালতে তোলা হলে বিচারক সৌরদীপকে সোমবার পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
ঘটনার সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে দিল্লির হিংসা নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন সৌরদীপ। তার পরেই বিতর্ক শুরু হয়। ‘ভয়েস অব বরাক ভ্যালি’ নামে একটি ফেসবুক পেজের সদস্যেরা সৌরদীপের ওই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন। ওই পোস্টের মাধ্যমে একটি বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিশ্বাসে আঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। সৌরদীপের ওই পোস্ট দেখে তাঁর কলেজের পড়ুয়াদের একাংশও প্রতিবাদ জানান। তাঁরা ক্লাস বয়কট করেন। বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপও দাবি করেন তাঁরা। এমনকি সৌরদীপের পদত্যাগেরও দাবিও জানান পড়ুয়ারা।
সৌরদীপ প্রেসিডেন্সি থেকে পদার্থ্যবিদ্যায় স্নাতক হন। এর পর তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওই বিষয়েই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান। এখন তিনি গুরুচরণ কলেজে অতিথি শিক্ষক হিসেবে পড়ান। শুক্রবার দুপুরে ওই মন্তব্যের জন্য ফেসবুকে ক্ষমা চান সৌরদীপ। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘কোনও জাতিকে অপমান করার উদ্দেশ্য আমার ছিল না। আমার মন্তব্যের জেরে যদি কোনও সম্প্রদায়ের মানুষ আহত হয়ে থাকেন, তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’’ এর পর ওই দিন রাতেই সৌরদীপকে গ্রেফতার করে শিলচর সদর থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন: ১৩ হাজার ২০০ ফোন পেয়েও নিষ্ক্রিয় ছিল দিল্লি পুলিশ! প্রকাশ্যে নয়া অভিযোগ
ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৫৯এ, ১৫৩এ, ৫০৭ ধারায় মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়াও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৬ ধারাতেও মামলা রুজু হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, সৌরদীপের বাড়িতে এসে কেউ বা কারা তাঁর বাবা-মাকে হুমকি দিয়ে গিয়েছেন। সেই অভিযোগও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: পুজোর জন্য ফুল কিনতে বেরিয়ে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় মহিলার মৃত্যু কালীঘাটে
সৌরদীপের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে এ রাজ্যের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘উত্তেজক মন্তব্য করা হয়েছে। শুধু গ্রেফতার নয়, সৌরদীপের শাস্তি হওয়া উচিত।’’