পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) বিলে সায় দিলেও দেরির দায় নিতে রাজি নয় কংগ্রেস।
দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে বুধবার রাজ্যসভায় জিএসটি চালুর জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে আলোচনা হবে। তাঁদের তিনটি দাবির মধ্যে দু’টিই নরেন্দ্র মোদী সরকার মেনে নেওয়ায় এই বিলে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। জিএসটি-র নানা খুঁটিনাটি বিষয়ে মতভেদ থাকলেও সংবিধান সংশোধনী বিলে আঞ্চলিক দলগুলিরও আর আপত্তি নেই। ২০১১-য় এই সংক্রান্ত যে সংবিধান সংশোধনী বিল প্রথম সংসদে পেশ হয়েছিল, সব ঠিক থাকলে বুধবার সন্ধ্যাতেই তা রাজ্যসভায় পাশ হয়ে যেতে পারে।
কিন্তু পাঁচ বছরের এই দেরির জন্য দায় নিতে নারাজ কংগ্রেস। বরং তাদের পরিকল্পনা হল, বিজেপিকেই এ জন্য কাঠগড়ায় তোলা। আগামিকাল রাজ্যসভায় রণকৌশল তৈরির জন্য আজ রাহুল গাঁধী দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম, লোকসভার নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে, রাজ্যসভার উপ-নেতা আনন্দ শর্মার উপস্থিতিতে ঠিক হয়, কংগ্রেসের তরফে মোদী সরকারকে আক্রমণের দায়িত্ব নেবেন চিদম্বরম। ইউপিএ আমলে ২০০৬-এ চিদম্বরম যখন অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্বে, তখনই জিএসটি প্রথম আলোচনার টেবিলে ওঠে।
চিদম্বরমদের যুক্তি হল, ইউপিএ আমলে ২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত এই বিজেপিই জিএসটি-তে সব রকম ভাবে বাধা দিয়েছে। এক দিকে গুজরাত, মধ্যপ্রদেশের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি এর বিরোধিতা করেছে। অন্য দিকে জাতীয় স্তরে বিজেপি কংগ্রেসকে জিএসটি-র কৃতিত্ব দিতে চায়নি। ২০১৪-য় ক্ষমতায় আসার পরও বিজেপি নেতৃত্ব জিএসটি নিয়ে মনস্থির করে উঠতে পারেননি। তাই ঐকমত্যের চেষ্টাও করেননি।
কংগ্রেস, তৃণমূল ও অন্য দলগুলির দাবি মেনে অর্থ মন্ত্রক সংবিধান সংশোধনী বিলে ছ’টি পরিবর্তন করছে। আজ তার তালিকা রাজ্যসভার সদস্যদের মধ্যে বিলি করা হয়েছে। এর মধ্যে কংগ্রেসের দাবি মেনে শিল্পোন্নত রাজ্যগুলির জন্য অতিরিক্ত ১ শতাংশ হারে করের প্রস্তাব তুলে নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন আঞ্চলিক দল তথা রাজ্যগুলির দাবি মেনে, জিএসটি চালুর পর রাজ্যগুলির রাজস্ব ক্ষতি হলে কেন্দ্র পাঁচ বছর তা মিটিয়ে দেবে বলেও জানিয়েছে। পাশাপাশি আন্তঃরাজ্য লেনদেনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারই কেন্দ্র-রাজ্য মিলিত বা ইন্টিগ্রেটেড জিএসটি (আইজিএসটি) বসাবে। মোদী সরকার আগের বিলে যে পরিবর্তন আনছে, তা হল, এই আইজিএসটি-তে রাজ্যের অংশটি কেন্দ্রের রাজকোষ বা কনসোলিডেটেড ফান্ডে যাবে না। কেন্দ্রীয় জিএসটি এবং আইজিএসটি-তে কেন্দ্রের অংশটিও রাজ্যগুলির সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হবে।